সম্প্রতি বাংলা থেকে তিহাড় জেলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে তাঁকে। এই মুহূর্তে সেখানেই রয়েছেন তিনি৷ শরীর বিশেষ ভাল নেই। বিভিন্ন রকম অসুবিধা দেখা দিয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও চালকলের শ্রমিকদের কথা ভোলেননি তৃণমূলের বীরভূম জেলার সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারকের কাছে ভোলেব্যোম চালকলের অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়ার আবেদনও করেছেন তিনি। বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী শুনেছেন অনুব্রতের বক্তব্য। তাঁর শারীরিক অসুবিধার বিষয়টি জেল কর্তৃপক্ষ যাতে নজরে রাখেন, সে জন্য জেল সুপারকে চিঠি পাঠাবেন বলে জানিয়েছেন বিচারক। একই সঙ্গে অ্যাকাউন্ট খোলার বিষয়টি নিয়ে আবেদন জানানোর জন্যও অনুব্রতকে জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার আসানসোল বিশেষ সিবিআই আদালতে অনুব্রত এবং তাঁর প্রাক্তন নিরাপত্তারক্ষী সহগল হোসেনের ভার্চুয়াল শুনানি ছিল। তিহাড় জেল থেকে উপস্থিত ছিলেন দু’জনেই। অনুব্রতকে দেখে বিচারক তাঁকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘আপনাকে খুব ক্লান্ত লাগছে। অনুব্রতবাবু, কেমন আছেন?’ অনুব্রত জবাব দেন, ‘শরীর ভাল নেই। সব রকম অসুবিধা হচ্ছে।’ বিচারক বলেন, ‘ডাক্তার দেখছে তো?’ কেষ্ট তখন উত্তর দেন, ‘ডাক্তার দেখাচ্ছি। জেলের মেডিক্যাল ওয়ার্ডে পড়ে আছি।’ বিচারক বলেন, ‘বুঝতে পারছি।’ এর পর বিচারক সহগলকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘তোমার গয়না রিপোর্ট অর্ধেক এসেছে।’ তার পর সরকারি আইনজীবীর উদ্দেশে বলেন, ‘গয়নার রিপোর্টটা কী হল?’ সরকারি আইনজীবী উত্তর দেন, ‘তদন্তকারী আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলে জানাচ্ছি।’
এর পর বিচারক সহগলকে বলেন, ‘আমি বিষয়টি দেখছি। অনেক দিন ধরেই বিষয়টা ঝুলে আছে। এ বার দ্রুত ব্যবস্থা হবে।’ তদন্তকারী আধিকারিকের সঙ্গে ফোনে কথা বলার পর সরকারি আইনজীবী বলেন, ‘স্যর ওঁর সঙ্গে কথা হয়েছে। পরবর্তী শুনানির দিনই সম্পূর্ণ রিপোর্ট জমা করা হবে।’ সহগলের প্রসঙ্গ শেষ হতেই অনুব্রত বলে ওঠেন, ‘স্যর চালকলের অ্যাকাউন্টটা ডিফ্রিজ (খুলে) দিন।’ বিচারক তখন জিজ্ঞাসা করেন, ‘কোন চালকল?’ অনুব্রত জবাব দেন, ‘ভোলেব্যোম চালকল। ওই দু’টি অ্যাকাউন্ট যেন খুলে দেওয়া হয়। শ্রমিকেরা বেতন পাচ্ছেন না। ২০০ শ্রমিক আছে। বহু জিনিসপত্র নষ্ট হচ্ছে।’ বিচারক তখন বলেন, ‘আপনার মুখের কথায় আমি কোনও অ্যাকাউন্ট তো খুলে দেওয়ার নির্দেশ দিতে পারি না। আইনজীবীর মাধ্যমে আবেদন করুন। আপনার এবং সিবিআই দু’পক্ষের কথা শুনে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’