এবার সরকারি অনুষ্ঠানের মঞ্চে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে মুখের ওপর জবাব দিলেন রাজ্যস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট। বুধবার মরুরাজ্যের নাথদ্বয়ারায় জাতীয় সড়ক ও রেলের প্রকল্প উদ্বোধন করতে যান প্রধানমন্ত্রী। শিলান্যাসের পর ভাষণে তিনি এই জাতীয় আর পাঁচটা অনুষ্ঠানের মতোই বিরোধী দল এবং অতীতের সরকারগুলির সমালোচনায় মুখর হন। অভিযোগ করেন, ‘বিরোধীরা শুধু নেতিবাচক দিকগুলি তুলে ধরে।’ সেই সঙ্গে প্রশ্ন তোলেন, আগের সরকারগুলি কেন রাস্তা, রেলের মতো পরিকাঠামোর উন্নয়নে জোর দেয়নি। আর এর জবাবেই মোদীকে কার্যত ধুয়ে দেন গেহলট। রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিরোধীদেরও তাদের কথা বলতে দিতে হবে। বিরোধী ছাড়া শাসক হয় নাকি? এটাই তো গণতন্ত্রের গোড়ার কথা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকেও এইভাবে ভাবতে হবে।’
গেহলট আরও বলেন, ‘এই যে আমরা এখানে বসে আছি। কেউ কংগ্রেস, কেউ বিজেপি। তাতে কারও কিছু এসে যায় না। আমরা কেউ কারও শত্রু নই। আমাদের বিরোধ নীতিগত।’ এরপর দেশে হিংসা, পিটিয়ে মারার ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রীকে একপ্রকার পরামর্শ দেওয়ার মতো করে তিনি বলেন, ‘এই ধরনের ঘটনার পর দেশবাসী প্রত্যাশা করে, আপনি বিবৃতি দিয়ে বলবেন, যারা এই কাজ করেছে তারা সমাজ বিরোধী।’ গেহলট প্রয়াত ইন্দিরা গান্ধী, রাজীব গান্ধীকে স্মরণ করে বলেন, ‘ইন্দিরাজি শহিদ হয়েছেন। কিন্তু খলিস্তান হতে দেননি। রাজীব গান্ধীও শহিদ হয়েছেন বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে। ইতিহাস বলছে আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারলে তবেই মঙ্গল। প্রধানমন্ত্রীর উচিৎ সর্বদা সেই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে দেশকে পরিচালনা করা।’
এখানেই থেমে না থেকে অনুষ্ঠান শেষ হতে লিখিত বিবৃতিতে ফের মোদীকে নিশানা করেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘সরকারি অনুষ্ঠানে রাজ্যপাল, মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর উচিৎ হয়নি ভাষণে রাজনীতি টেনে আনা। তাঁর মুখে বিরোধী দল এবং আগের সরকারগুলির সমালোচনা শোভা পায় না।’ গেহলট যে তাঁর মুখের ওপর এভাবে জবাব ফিরিয়ে দেবেন, সম্ভবত মোদী তা ভাবতে পারেননি। কারণ অতীতে একাধিকবার রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসা করেছেন তিনি। তাঁকে বন্ধু বলেও সম্মোধন করেছেন। যে কারণে কংগ্রেসের সচিন পাইলট শিবির অভিযোগ করে থাকে গেহলটের সঙ্গে মোদীর সেটিং আছে। বুধবার সেই মোদীকে মুখের ওপর জবাব দিয়ে গেহলট তাঁর দলীয় প্রতিপক্ষ সচিনের মুখেও ঝামা ঘষে দিয়েছেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।