শোকের আবহ বাংলা সাহিত্যজগতে। বেশ কিছুদিন অসুস্থ ছিলেন তিনি। সোমবার বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে প্রয়াত হলেন বিখ্যাত সাহিত্যিক সমরেশ মজুমদার। সন্ধ্যা পৌনে ৬টা নাগাদ তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। হাসপাতাল সূত্রের খবর, গত ২৫শে এপ্রিল মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কারণে তাঁকে ভর্তি করানো হয়েছিল সাহিত্য অকাডেমি পুরস্কার জয়ী সাহিত্যিককে। এর পর শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা বাড়তে থাকে। আগে থেকেই সমরেশের সিওপিডি সমস্যা ছিল। বাড়ছিল ঘুমের মধ্যে শ্বাসকষ্টের সমস্যা বা স্লিপ অ্যাপমিয়া।
উল্লেখ্য, ১৯৪৪ সালে জন্ম সমরেশ মজুমদারের। শৈশব কেটেছে ডুয়ার্সের গয়েরকাটায়। জলপাইগুড়ি জেলা স্কুলের ছাত্র ছিলেন। কলকাতায় স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে বাংলায় স্নাতক হন তিনি। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর হন। শিক্ষা সূত্রেই শহর কলকাতার সঙ্গে পরিচয়। শুরুতে ছোটগল্প লিখেই খ্যাতি। পরবর্তীকালে ১৯৭৫ সালে ‘দৌড়’ উপন্যাস ছাপা হয়েছিল একটি বাণিজ্যিক পত্রিকায়। অচিরেই বৃহত্তর পাঠক এবং সমালোচকের নজর কাড়েন সমরেশ। তারপর অসংখ্য উপন্যাস, গল্প, রম্য, ভ্রমণ কাহিনি। তাঁর উপন্যাস ট্রিলজি ‘উত্তরাধিকার, ‘কালবেলা’, ‘কালপুরুষ’ বাংলা সাহিত্যে তাঁকে স্থায়ী আসন দিয়েছে বলে মনে করা হয়। যার অন্তিমপর্ব ‘মৌষলকাল’। ছোটদের পছন্দের গোয়েন্দা চরিত্র অর্জুনের স্রষ্টাও সমরেশ। সাহিত্যকৃতির জন্য সাহিত্য আকাডেমি, আনন্দ পুরস্কার, বঙ্কিম পুরস্কার-সহ অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। তাঁকে বাংলার সর্বোচ্চ সম্মান বঙ্গভূষণে ভূষিত করেছে রাজ্য সরকার। সমরেশবাবুর প্রয়াণে গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।