রেলমন্ত্রী থাকাকালীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মাঝেমধ্যেই রেলে সফর করতেন। তবে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বেশির ভাগ সময় কলকাতা থেকে হেলিকপ্টারে চড়েই জেলা সফরে গিয়েছেন বলা চলে। এতে সময় যেমন বেঁচেছে, তেমন একাধিক বৈঠকেও যোগ দিতে সুবিধা হয়েছে। তবে এইবার ব্যতিক্রম, হেলিকপ্টারে নয়, ট্রেনে চড়েই দু’দিনের সফরে মালদা এসেছেন তিনি। আর মালদা যাওয়ার পথে বুধবার নিউ ফরাক্কা স্টেশনে দশ মিনিটের জন্য নামেন মমতা। তাঁকে ফুলের তোরা দিয়ে স্বাগত জানান জঙ্গীপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তথা বিধায়ক খলিলুর রহমান,ফরাক্কার বিধায়ক মণিরুল সহ তৃণমূল নেতৃত্ব।
বুধবার সরাইঘাট এক্সপ্রেসে চড়ে মালদা যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেন মুখ্যমন্ত্রী। মাঝে নিউ ফরাক্কা স্টেশনে স্টপেজ দেয় ট্রেন। প্রায় বারো মিনিটের মতো প্ল্যাটফর্মে দাঁড়ায় ট্রেনটি। সেই সময় ট্রেনের গেটের মুখে দাঁড়ান মুখ্যমন্ত্রী। এ দিকে, সুপ্রিমো যে আসছেন সেই খবর আগে থেকেই ছিল জেলার নেতৃত্বদের কাছে। ফলে প্রস্তুতি ছিল প্রথম থেকেই। ক্ষনিকের জন্য মুখ্যমন্ত্রী যেতেই বিধায়করা ফুলের তোড়া তাঁর হাতে তুলে দেন। স্টেশনে উপচে পড়ে ভিড়। তৃণমূল কর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষ যাঁরা সেই সময় প্ল্যাটফর্মে উপস্থিত ছিলেন তাঁদেরও উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মত। কেউ ভিডিও করছেন, কেউ আবার মুখ্যমন্ত্রীকে এক ঝলক দেখার জন্য ভিড় ঠেলে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। কেউ আবার সেই মুহূর্তকে ক্যামেরাবন্দি করে রাখতে ব্যস্ত।
তবে মুখ্যমন্ত্রীর এই ট্রেন সফরকে ঘিরে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের ধারনা আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটের আগে এটি মমতার জনসংযোগের কৌশল। আবহাওয়া খারাপ থাকার কারণে হেলকপ্টারে মালদা যাওয়া বাতিল হলেও আখেরে লাভই হয়েছে। ভোটের আগে একদিকে মালদায় জনসভা যেমন মুখ্যমন্ত্রী করছেন, তেমনই সফরে যাওয়ার পূর্বে স্টেশনে দাঁড়িয়ে নেতা কর্মীদের সঙ্গে জনসংযোগ বাড়ানো। কারণ ভোটের আগে তৃণমূল উঠে পড়ে লেগেছে মানুষে পালস বুঝতে। সাধারণ ভোটার তাঁরা কী ভাবছেন সেটা জানার থেকেও দলের নেতা কর্মীরা কী ভাবছেন। তাই,পঞ্চায়েতের আগে মুখ্যমন্ত্রীর এই ট্রেন সফর যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তৃণমূলের কাছে সে কথাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।