বাংলার প্রতিটি মানুষই জানেন তাঁর লড়াইয়ের যাত্রাপথ। কেবল রাজ্যই নয়, সারা দেশের রাজনৈতিক আঙিনায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব তিনি। বাংলায় বিরোধী দলনেত্রী থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরও সেই লড়াইয়ের পথ থেকে এতটুকুও চ্যুত হননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ মালদহে ‘তৃণমূলে নবজোয়ার’ কর্মসূচীতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে একমঞ্চে উঠে সেই লড়াইয়ের কথা আবার মনে করিয়ে দিলেন তিনি। বললেন, ”আপনারা সবাই আমাকে দেখছেন। কিন্তু জানেন, আমি তো জীবন্ত লাশ। আমরা শরীরে যে কত আঘাত, তা আমিই জানি।” পঞ্চায়েত ভোটের আগে স্বচ্ছতায় জোর দিয়ে প্রার্থী বাছাইয়ের লক্ষ্য নিয়ে নতুন জনসংযোগ কর্মসূচীতে নেমে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জেলায় জেলায় ঘুরছেন। এই মুহূর্তে তিনি মালদহে। আর একই সময়ে প্রশাসনিক সফরে একই জেলায় উপস্থিত মুখ্যমন্ত্রী। ইংরেজবাজারে তাই এক মঞ্চে দেখা গেল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার এই মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী অভিষেকের নেতৃত্বে ‘তৃণমূলে নবজোয়ার’ কর্মসূচির প্রশংসা করেন। বলেন, ”আমি বলেছিলাম যে একটু বিরতি নিয়ে নিয়ে জেলা সফর করতে। কিন্তু আজকাল ছেলেমেয়েরা তো নিজেদের সিদ্ধান্তে স্থির। অন্যের কথা শুনতে চায় না। তবে যাই হোক, এই কর্মসূচি মানুষ খুব ভালভাবে গ্রহণ করেছে। তাই আমারও সমর্থন আছে। যেখানে মানুষের সমর্থন, সেখানেই আমার সমর্থন থাকবে।” এদিন স্নেহের স্বরে মঞ্চে উপস্থিত অভিষেককে মমতা বলেন, ”তোর অনেক হাঁটা হল।” নিজের রাজনৈতিক জীবন নিয়ে এরপর মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ”আমি তো জীবন্ত লাশ। আপনারা জানেন না হয়ত। আমার সারা শরীরে অত্যাচারে জর্জরিত। ২১ জুলাই মহাকরণ অভিযান কর্মসূচিতে আমার উপর পুলিশ লাঠিচার্জ করে। মাথার একদিকে প্রথমে লাঠির বাড়ি লাগে। রক্ত পড়তে শুরু করে। তারপর আবার আরেকদিকে লাঠির আঘাত। আমি বুঝতে পারে, ঝরঝর করে রক্ত বেরচ্ছে। তারপর পিঠে, হাতে আঘাত। শরীরটা আমার আঘাতে আঘাতে জর্জরিত।” উল্লেখ্য, একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে নন্দীগ্রামে প্রচারে গিয়েও দুর্ঘটনার মুখে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী। গাড়িতে উঠতে গিয়ে আঘাতে তাঁর পা ভাঙে, প্লাস্টার হয়। বেশ কয়েকদিন এসএসকেএম হাসাপাতালে ভরতি ছিলেন তিনি। গোটা বিধানসভা নির্বাচনের প্রচার সেরেছিলেন হুইল চেয়ারে বসেই। এখনও মাঝেমধ্যে সেই পায়ের চিকিৎসা করাতে হয় মুখ্যমন্ত্রীকে।