এবারের কর্ণাটকের ভোটে খলনায়ক তিনি। কিন্তু সেখানে ভোট প্রচারে গিয়ে সেই বিতর্কিত নেতা কেএস ঈশ্বরাপ্পাইকে পাশে নিয়েই ঘুরছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
এবারের কর্ণাটক বিধানসভার ভোটে রাজ্যের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে কংগ্রেস-সহ বিরোধীদের অন্যতম অস্ত্র ‘ঘুষের বিনিময়ে চাকরি ও কাজ’-এর অভিযোগ, যাকে এককথায় ‘কমিশন রাজ’ বলা হচ্ছে। বিরোধীদের বক্তব্য, সরকারি প্রকল্পের কাজের টাকাই শুধু নয়, বিধবা ভাতা, বার্ধক্য ভাতা, স্টুডেন্টস স্কলারশিপ থেকে একশো দিনের কাজের মজুরি, টাকা হাতে পেতে ৪০ ভাগ অর্থ সিন্ডিকেটকে কমিশন বাবদ দিতেই হবে। বিজেপি এবং সরকারি কর্তাদের এই কমিশনকে এড়িয়ে সরকারের ঘর থেকে এক টাকাও আদায় করা সম্ভব নয়।
আর এই ব্যাপারে বিরোধীদের নিশানায় খলনায়ক প্রবীণ ঈশ্বরাপ্পা। তিনি রাজ্যের প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী এবং গত বছর অক্টোবর পর্যন্ত ছিলেন গ্রামোন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী। সাতবারের বিধায়ক ঈশ্বরাপ্পাকে এবার টিকিট দেয়নি বিজেপি। কারণ, গত বছর এক ঠিকাদার গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যার আগে সুইসাইড নোটে লিখে যান মন্ত্রী ঈশ্বরাপ্পাকে ঘুষ না দেওয়ায় তিনি মোটা টাকার বিল আটকে দিয়েছেন। ফলে ব্যবসা চৌপাট হয়ে গিয়েছে। মোদী এবং মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাইকে চিঠি লিখেও একই অভিযোগ করেছিলেন সেই ঠিকাদার। ঘটনার প্রতিবাদে ঠিকাদাররা সরকারি কাজ বন্ধ করে দিলে ঈশ্বরাপ্পাকে পদত্যাগ করানো হয়।
বিরোধীরা এবার প্রচারে সিন্ডিকেটরাজ আর ঘুষের বিনিময়ে চাকরি, কাজ নিয়ে সরব। রাহুল, প্রিয়াঙ্কা গান্ধীরা ভাষণের সিংহভাগ সময় জুড়ে ঘুষ নিয়েই বলছেন। তাঁদের প্রশ্ন, প্রধানমন্ত্রী কি ভুলে গেলেন তাঁর নিজের দেওয়া স্লোগান, ‘না খাউঙ্গা, না খানে দুঙ্গা’? ঈশ্বরাপ্পার বিরুদ্ধে প্রয়াত ঠিকাদারের পরিবার আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে এফআইআর করেছে। ঘুষ নেওয়ার গুরুতর অভিযোগে মন্ত্রিত্ব খোয়ানো সেই নেতাকে পাশে নিয়ে ঘুরছেন মোদী। তাঁর পাশে মূলত মহীশূর এলাকার সভাগুলিতে উপস্থিত থাকছেন ঈশ্বরাপ্পা। যা নিয়ে বিজেপির অন্দরেও প্রশ্ন আছে। অনেকেই মনে করছেন, এতে দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর লম্বাচওড়া কথা প্রশ্নের মুখে পড়ছে। দলেরও মুখ পুড়ছে।