আগামী ১০ মে কর্ণাটকের বিধানসভা নির্বাচন। আর তার আগে গেরুয়া শিবিরকে কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন বর্ষিয়ান কংগ্রেস নেতা তথা কর্ণাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া। সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, অপারেশন লোটাস সব সময় সফল হতে পারে না…! বিজেপি যদি আবার চেষ্টা করে, তবে শোচনীয়ভাবে তা ব্যর্থ হবে। তাঁর দাবি, ‘১০ ই মে রাজ্যে যে ভোট অনুষ্ঠিত হতে চলেছে তাতে কংগ্রেস নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠন করবে’।
সিদ্দারামাইয়া বলেন, বিজেপি মানুষের আস্থা হারাচ্ছে। দলের নেতারা দলত্যাগ করে কংগ্রেসে আসছেন। আমরা ২০১৮ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলাম, এবং যদিও আমরা তখন বিজেপির থেকে আমরা বেশি ভোট পেয়ে ক্ষমতায় আসি। তারপর মানুষ আমাদের চাইনি তাই সরকারে থাকতে পারিনি। তবে এবারের নির্বাচন একেবারে আলাদা। জাতীয় রাজনীতির দৃষ্টিকোণ থেকেও আসন্ন নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যদি আমরা এই নির্বাচনে জয়ী হই, তাহলে জাতীয় রাজনীতির জন্য এটা গুরুত্বপূর্ণ কারণ সামনেই লোকসভা নির্বাচন। কর্ণাটক বিধানসভায় বিরোধী দলের নেতা শুক্রবার জানিয়েছেন, কর্ণাটক কংগ্রেস সভাপতি ডি কে শিবকুমারের সঙ্গে তার সম্পর্ক সৌহার্দ্যপূর্ণ তাদের মধ্যে কোনও মত পার্থক্য নেই। তিনি এ-ও জানাতে ভোলেননি, যে আসন্ন কর্ণাটক বিধানসভা নির্বাচন হবে তার শেষ নির্বাচনী লড়াই।
সিদ্দারামাইয়া বলেন, ‘আমি বরুণা বিধানসভা কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি কারণ দলীয় হাইকমান্ড এটাই অনুমোদন করেছে।’ কংগ্রেস এবার ১৩০ টিরও বেশি আসন পেয়ে ফের একবার ক্ষমতায় ফিরতে চলেছে বলে আশাবাদী তিনি। রাজ্যে মুসলমানদের জন্য সংরক্ষণ নিষিদ্ধ করা নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে সিদ্দারামাইয়া বলেন, ‘সংরক্ষণ নিষিদ্ধ সাংবিধানিক পদক্ষেপ নয়। এটা গ্রহণযোগ্য নয়…! ভোক্কালিগা এবং লিঙ্গায়ত সম্প্রদায়ের সংরক্ষণ বাড়াতে আমাদের কোন আপত্তি নেই, তা বলে কেন মুসলমানদের সংরক্ষণ কমিয়ে দেওয়া হল? তিনি আরও বলেন, এটা স্পষ্টভাবেই বিজেপির ঘৃণার রাজনীতির পরিচয়।’ এদিকে, মুসলিমদের জন্য ৪ শতাংশ কোটা পুনরায় চালু করা, সংরক্ষণের সর্বোচ্চ সীমা ৫০ শতাংশ থেকে ৭৫ শতাংশ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মঙ্গলবারই কর্ণাটকে নির্বাচনী ইস্তাহার প্রকাশ করেছে কংগ্রেস।
পাশাপাশি ক্ষমতায় এলে আইনসভার প্রথম অধিবেশনে আর্থ-সামাজিক ও বর্ণ সুমারি প্রতিবেদন প্রকাশ করার প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছে ইস্তাহারে। সেখানে বলা হয়েছে, ‘এসসি, এসটি, ওবিসি, সংখ্যালঘু, লিঙ্গায়েত এবং ভোক্কালিগাদের মত বিভিন্ন সম্প্রদায়ের আশা-আকাঙ্ক্ষা মেটাতে সংরক্ষণের সীমা ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৭৫ শতাংড করা হবে। এসসিদের সংরক্ষণ ১৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৭ শতাংশ, এসটিদের সংরক্ষণ ৩ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৭ শতাংশ করা হবে। সংখ্যালঘুদের সংরক্ষণ ৪ শতাংশ পুনরায় লাগু করা হবে। এর সঙ্গে লিঙ্গায়েত, ভোক্কালিগা এবং অন্যান্য সম্প্রদায়ের জন্যও সংরক্ষণ বৃদ্ধি করা হবে।’ কংগ্রেস জানে নির্বাচনে জয় মোটেও সহজ নয়। এর জন্য একাধিক বড় প্রতিশ্রুতি সামনে রেখেছে দল। ঠিক এই কারণেই এবারের ইস্তেহারে মহিলা ও যুবকদের মন জিততে ভাতা ঘোষণা করেছে দল। সবচেয়ে বড় বাজি হল সংরক্ষণের হার বাড়ানো।