কঠিন ছিল না লক্ষ্যমাত্রা। জিততে হলে ২০ ওভারে করতে হত মাত্র ১২৭। কিন্তু ঘরের মাঠে এমন সহজ লক্ষ্য পেয়েও জিততে পারল না লখনউ সুপার জায়ান্টস। ব্যাটিং বিপর্যয়ের মাশুল দিতে হল তাদের। বিরাট কোহলিদের রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের কাছে লোকেশ রাহুলের দল হারল ১৮ রানে। বেঙ্গালুরুর ৯ উইকেটে ১২৬ রানের জবাবে লখনউয়ের ইনিংস ১৯.৫ ওভারে শেষ হল ১০৮ রানে। বেঙ্গালুরুর ব্যাটারদের ব্যর্থতা ঢেকে দিলেন বোলাররা। প্রথমে ব্যাট নিয়েও লখনউয়ের বিরুদ্ধে বড় রান তুলতে পারেনি বেঙ্গালুরু। লখনউয়ের স্পিন সহায়ক ধীর গতির উইকেটে চেনা ছন্দে দেখা গেল না বিরাট কোহলি ও ফ্যাফ ডুপ্লেসিকেও। প্রথম ক্রিকেটার হিসাবে আইপিএলে ৭০০০ রান পূর্ণ করতে কোহলির দরকার ছিল ৪৩ রান। সোমবার লখনউয়ের বিরুদ্ধে সেই লক্ষ্যে পৌঁছতে পারলেন না। ওপেন করতে নেমে ৩০ বলে করলেন ৩১ রান। রবি বিষ্ণোইয়ের বলে আউট হওয়ার আগে তিনটি চার এল তাঁর ব্যাট থেকে। ব্যর্থ তিন নম্বরে নামা অনুজ রাওয়াত (৯) এবং চার নম্বরে নামা গ্লেন ম্যাক্সওয়েলও (৪)। দলকে ভরসা দিতে পারেননি পাঁচ নম্বরে নামা সুযশ প্রভুদেশাই (৬)। ধারাবাহিক ব্যবধানে উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় বেঙ্গালুরুর ইনিংস। অধিনায়ক ফ্যাফ ডুপ্লেসি ২২ গজের এক দিক আগলে রাখলেও আগ্রাসী হতে পারেননি। ৪০ বলে ৪৪ করে আউট হন তিনি।
এদিন ম্যাচের দ্বিতীয় ওভারের ফিল্ডিং করতে গিয়ে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন অধিনায়ক রাহুল। বাকি ইনিংসে নেতার দায়িত্ব সামলান ক্রুণাল পাণ্ডিয়া। বেঙ্গালুরুর ইনিংসের ১৫ ওভার ২ বল হওয়ার পর বৃষ্টির জন্য খেলা বন্ধ রাখতে হন আম্পায়াররা। মিনিট ২৫ পর খেলা শুরু হলে বেঙ্গালুরুর ব্যাটাররা আগ্রাসী মেজাজে ব্যাটিং করার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাতেও বিশেষ লাভ হয়নি। নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট হারানো বন্ধ হয়নি তাঁদের। ডুপ্লেসি উইকেট ছুঁড়ে দেন অমিত মিশ্রর বলে। রান পেলেন না মাহিপাল লোমরোর (৩)। কিছুটা চেষ্টা করলেও আগের মরসুমের ছন্দে দেখা যাচ্ছে না দীনেশ কার্তিককে (১৬)। শেষের দিকের ব্যাটাররাও তেমন কিছু করতে পারলেন না। লখনউয়ের সফলতম বোলার নবীন উল হক ৩০ রানে ৩ উইকেট নিলেন। বিষ্ণোই ২১ রান দিয়ে ২ উইকেট নিলেন। ২১ রানে ২ উইকেট অমিতেরও। তবে তিনি বল করেছেন ৩ ওভার। ১২৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে প্রথম থেকেই উইকেট হারাতে শুরু করেন লখনউ। ব্যর্থ দুই ওপেনার কাইল মেয়ার্স (শূন্য) এবং আযুষ বাদোনি (৪)। প্রথম ছয় ব্যাটারের কেউই বলার মতো রান পেলেন না। ক্রুণাল (১৪), দীপক হুডা (১), মার্কাস স্টোইনিস (১৩), নিকোলাস পুরানরা (৯) বেঙ্গালুরুর বোলারদের সামনে ২২ গজে দাঁড়াতেই পারলেন না। পাল্টা আক্রমণের কিছুটা চেষ্টা করেছিলেন সাত নম্বরে ব্যাট করতে নামা কৃষ্ণাপ্পা গৌতম। তবে তাঁর ১৩ বলে ২৩ রানের ইনিংস লখনউকে ম্যাচে ফেরানোর জন্য যথেষ্ট ছিল না। ৬৬ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে লখনউয়ের ব্যাটাররা বেঙ্গালুরুর জয় এক রকম নিশ্চিত করে দেন।
সোমবার লখনউয়ের সমস্যা আরও বাড়ে চোট পাওয়া রাহুল ১১ নম্বরের আগে ব্যাট করতে নামতে না পারায়। তিনি নামলেও লখনউ কতটা সুবিধা করতে পারত, তা নিয়ে অবশ্য সংশয় থাকল। কারণ তিনি ভাল করে হাঁটতেই পারছিলেন না। খুচরো রান নেওয়াও সম্ভব হচ্ছিল না তাঁর পক্ষে। সামনে রয়েছে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল। গুরুতর চোট নিয়ে তাঁর ব্যাট করতে নামা কিছুটা হলেও বিস্ময়কর। তাঁর দলের সে সময় জেতার সম্ভাবনা ছিল না বললেই চলে। শেষ বেলায় লখনউয়ের হারের ব্যবধান কিছুটা কমাল অমিত (১৯) এবং নবীনের (১৩) লড়াই। বেঙ্গালুরুর ব্যাটারদের ব্যর্থতা ঢেকে দিলেন বোলাররা। জশ হ্যাজলউড, ম্যাক্সওয়েলদের বোলিং দক্ষতার সামনে ঘরের মাঠে হার স্বীকার করল লখনউ। আরসিবির সফলতম বোলার হ্যাজলউড ১৫ রানে ২ উইকেট নিলেন। কর্ণ শর্মার ২০ রানে ২ উইকেট। ম্যাক্সওয়েল ছাড়াও ১টি করে উইকেট পেয়েছেন হর্ষল প্যাটেল এবং ওয়ানিন্দু হাসরঙ্গ।