তিনি একাধারে লেখক, কোভিড হিরো, উদ্যোগপতি, আবার তিনিই সব থেকে বড় জালিয়াত! সঞ্জয় রাইয়ের কাহিনী যে কোন সিনেমার চিত্রনাট্যকে হার মানাবে। পিএমও অথবা প্রধানমন্ত্রী দফতরের পরিচয় দিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের এসটিএফ-এর হাতে ধরা পড়েন জালিয়াত সঞ্জয় রাই। এর মাঝেই তদন্তে উঠে এসেছে বিস্ফোরক তথ্য।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে আরএসএস প্রধান মোহন ভগবতের সঙ্গে একাধিক ছবি রয়েছে তার সোশ্যাল মিডিয়ায়। ‘দিব্যদর্শী মোদী’ নামের একটি বইও লিখেছেন। বিভিন্ন ধর্মগুরুদের সঙ্গেও দেখা যাচ্ছে তাকে। বিজেপি প্রধান জেপি নাড্ডা, আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর সহ বহু বিশিষ্ট মানুষের সঙ্গে সঞ্জয় রাইয়ের ছবি প্রকাশ পেতেই আসরে নেমেছে বিরোধী দলগুলি।
উত্তর প্রদেশ পুলিশ জানিয়েছে তার সংস্থা ‘ইয়ুথ রুরাল এন্টারপ্রনিউর ফাউন্ডেশন’-এর উপদেষ্টা পদে ছিলেন একাধিক অবসরপ্রাপ্ত দুঁদে আমলা। উপদেষ্টা বোর্ডে ছিলেন গুজরাত ক্যাডারের আইএএস (অবসরপ্রাপ্ত), এস কে নন্দা। ছিলেন ভাইস অ্যাডমিরাল সুনীল আনন্দ, এয়ার কমোডর মৃগিন্দ্র সিং, ছিলেন অলোক ভার্মাও।
এই সংস্থার অন্য অংশীদার হলেন কুশাগ্র শর্মা, যিনি অবসরপ্রাপ্ত গুজরাত ক্যাডার আইপিএস এ কে শর্মার ছেলে। এস কে নন্দা বলেন, ‘রাজ্য সরকার কর্তৃক আয়োজিত এক সম্মেলন এবং বেশ কয়েকটি সরকারি অনুষ্ঠানে সঞ্জয় রাইয়ের সঙ্গে আমার দেখা হয়েছিল, আমি জানি না তিনি কীভাবে আমার নাম উপদেষ্টা বোর্ডের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছেন। আমি কখনও ওনার সংস্থার কোন মিটিংয়ে অংশগ্রহণ করিনি’।
আইএএস এস কে নন্দার নাম এর আগেও জড়ায় কিরণ প্যাটেলের নামের সঙ্গে। যাকে জম্মু ও কাশ্মীর থেকে গত মার্চে ভুয়ো পিএমও আধিকারিক পরিচয়ে গ্রেফতার করা হয়। তদন্তে জানা গিয়েছিল তিনি কিরণ প্যাটেলকে একাধিকবার সাহায্য করেছিলেন। ভাইস অ্যাডমিরাল সুনীল আনন্দও সঞ্জয়ের সংস্থার সঙ্গে তার যোগাযোগের কথা অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি সঞ্জয় রাইকে চিনি এবং তার সঙ্গে দেখাও করেছি। কিন্তু ওনার এই এনজিওর সঙ্গে আমার কোন সম্পর্ক নেই’। সঞ্জর রাইয়ের সংস্থা ২০২২-২০২৩ সালে অনুদান হিসাবে ৭.৮৪ কোটি টাকা পেয়েছে। সেই তালিকায় রয়েছে ডালমিয়া ফ্যামিলি অফিস ট্রাস্ট সহ বেশ কয়েকটি দিল্লির কোম্পানি।