রাজ্যে সরকারি ভাবে বর্ষা আসে ১০ জুন। সেই সময় বর্ষা প্রথম পা রাখে উত্তরবঙ্গের বুকে। তার এক থেকে দেড় সপ্তাহের মধ্যেই কলকাতায় বর্ষা ঢুকে যায়। কিন্তু বিগত কয়েক বছর ধরেই দেখা যাচ্ছে সেই সময়সীমা ঠিক ভাবে মানছে না মৌসুমি বায়ু। শুধু তাই নয়, বর্ষার যে ধারাপাত আগে দেখা যেত সেই ধারাপাতও এখন বদল এসেছে। শ্রাবণ ধারার বদলে দেখা যাচ্ছে বড় সময় ধরে বৃষ্টি ঘাটতি এবং বর্ষার শেষের দিকে টানা ভারী বর্ষণ। যার জেরে জেলায় জেলায় বন্যার প্রাদুর্ভাব। তাই এবার সময় থাকতে থাকতেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে কোমর বাঁধছে রাজ্য প্রশাসন। সেই সূত্রেই বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় আগামি মঙ্গলবার একটি বিশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে চলেছে নবান্নের সভাঘরে।
বাংলার বুকে বন্যা ঠেকাতে প্রশাসনিক বৈঠক থেকে বাঁধ ও খাল সংস্কারে দ্রুত প্রস্তুতির নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই মতো ঘূর্ণিঝড়, বন্যা ও ধসের মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলায় প্রস্তুতি বৈঠক ডেকেছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। আগামী মঙ্গলবার নবান্ন সভাঘরে এই বৈঠকে হবে। সেখানে ডিভিসি, আলিপুর আবহাওয়া অফিস, কলকাতা পোর্ট ট্রাস্ট, সেন্ট্রাল ওয়াটার কমিশন, সেনা-সহ সংশিষ্ট কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠান ও রাজ্য সরকারের দফতরগুলিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। বন্যা ও সাইক্লোনের পূর্বাভাস ও সেই মতো ত্রাণ ও পুনর্গঠনের প্রস্তুতি নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হবে।
উল্লেখ্য, মে মাসের মাঝামাঝি একটা সাইক্লোন আসতে পারে বলে ইতিমধ্যেই জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। তাই যাবতীয় প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে চাইছে রাজ্য সরকার। প্রতিবেশী রাজ্যগুলির বন্যা পরিস্থিতিতে নজর রাখার জন্য আগেই সেচ দফতরকে নির্দেশ দিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। পাশাপাশি জলাধারে জলের পরিমাণ নিয়ে ডিভিসি-র সঙ্গেও নিয়মিত যোগাযোগ রাখার কথা বলা হয়েছে। সে জন্য ১ জুন বর্ষা নামার আগেই কন্ট্রোল রুম খোলার নির্দেশ দিয়েছে সেচ দফতর। মঙ্গলবারের বৈঠকে এ ব্যাপারে ডিভিসি ও সেন্ট্রাল ওয়াটার কমিশনের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করতে চান মুখ্যসচিব। যাতে জল ছাড়ার বিষয়টি অনেক আগে থেকে রাজ্যের নজরে থাকে।