প্রবল বিপাকে বিজেপি সাংসদ তথা তথা কুস্তি সংস্থার সভাপতি ব্রিজভূষণ শরণ সিংহ। তাঁর বিরুদ্ধে যৌননিগ্রহের অভিযোগ করেছেন দেশের একাধিক কুস্তিগির। এই বিষয়ে তদন্ত চলছে। একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। যে কমিটিতে রয়েছেন প্রাক্তন কুস্তিগির ববিতা ফোগাট। তিনি ফাইনাল রিপোর্ট দেখছিলেন। কিন্তু, ববিতার অভিযোগ সেই রিপোর্ট পুরোটা দেখার আগেই কেড়ে নেন রাধিকা শ্রীমান। তিনিও ওই তদন্ত কমিটির এক জন সদস্য। ইতিমধ্যেই ঘটনাটি ঘিরে তুঙ্গে শোরগোল। যে কমিটি তদন্ত করছে, সেখানেই এমন বিভেদ ঘটায় অবাক সকলেই। সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে ববিতা বলেন, “রিপোর্টটা সবে পড়তে শুরু করেছিলাম। কয়েকটা পাতাই মাত্র পড়েছি। কিছু বিষয় নিয়ে আমার আপত্তিও ছিল। এমন সময় রাধিকা শ্রীমান এলেন এবং আমার হাত থেকে রিপোর্টটা কেড়ে নিলেন। তিনি বলেন, আমি ফোগাট পরিবারের অংশ। তারা আন্দোলন করছে। সেই কারণে আমি রিপোর্ট পড়তে পারব না।”
উল্লেখ্য, ববিতাদের এই কমিটিতে রয়েছেন বক্সিং তারকা মেরি কম। তাঁর নেতৃত্বেই তদন্ত হয়েছে। রাধিকা কমিটিতে ছিলেন মেরি কমের প্রতিনিধি হয়ে। ববিতা বলেন, “চেয়ারম্যান মেরি কমের হয়ে কমিটিতে ছিলেন রাধিকা। আমাকে তিনি বলেন যে, চেয়ারম্যান এই রিপোর্টে সেই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।” রাধিকা যদিও এই সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, “আমি এমনটা কেন করব? এই কাজ করে আমার কী লাভ হবে? সত্যি বলতে ববিতা রিপোর্টটি চার-পাঁচ বার পড়েছেন এবং সম্মতি দিয়েছেন। রিপোর্টে লেখা সব কথা বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে ববিতাকে। রিপোর্টে যা লেখা রয়েছে, সেটার পক্ষে প্রমাণও আছে। কোনও ভাবে ওই রিপোর্টকে ভুয়ো বলা যাবে না।” ৪ই এপ্রিল রিপোর্টে সই করার কথা ছিল। কিন্তু ববিতা আসেননি।
প্রসঙ্গত, যন্তর মন্তরে আবার ধর্না শুরু করেছেন দেশের বেশ কয়েক জন নামী কুস্তিগির। বজরং পুনিয়া, সাক্ষী মালিক, বিনেশ ফোগাটদের দাবি, জাতীয় কুস্তি সংস্থার সভাপতি ব্রিজভূষণ শরন সিংহকে গ্রেফতার করতে হবে। ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে যে তদন্ত হয়েছে সেই রিপোর্টও সকলের সামনে প্রকাশ করার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। যত দিন না তাঁদের দাবি পূরণ হচ্ছে তত দিন তাঁরা ধর্না চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন। বক্সার মেরি কমের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের কমিটি ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত করেছে। এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে নিজেদের রিপোর্ট জমা দিয়েছে তারা। কিন্তু সরকার এখনও সেই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আনেনি। এখানেই আপত্তি কুস্তিগিরদের। ইতিমধ্যে সুপ্রিম কোর্ট চিঠি দিয়েছে দিল্লী পুলিশকে। কুস্তিগিরদের তরফে ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্ট নোটিশ পাঠিয়ে ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে এফআইআর দেখতে চাইল। ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে যাতে এফআইআর নেওয়া হয়, সেই মর্মে শীর্ষ আদালতের কাছে কাছে আবেদন করেছিলেন সাত জন কুস্তিগির।