শুরু হয়ে গিয়েছে কাউন্টডাউন। আর কিছুদিন পরেই রাজ্যজুড়ে পঞ্চায়েত নির্বাচন। সরগরম রাজ্য-রাজনীতি। ভোটের আগে বাংলার জেলায় জেলায় জনসংযোগ দৃঢ়তর করতে তৎপর শাসকদল তৃণমূল। নতুন কর্মসূচী ‘তৃণমূলে নব জোয়ার’ নিয়ে আজ কোচবিহারে গিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কোচবিহারে হেলিপ্যাড থেকে পায়ে হেঁটে মদনমোদন মন্দিরে গিয়ে পুজো দেন তিনি। মঙ্গলবার কোচবিহার থেকে জনসংযোগ যাত্রার সূচনা করবেন তিনি। দু’মাসব্যাপী এই কর্মসূচী বিভিন্ন জেলা হয়ে সাগরে গিয়ে শেষ হবে। সোমবার এখান থেকেই বাংলা ভাগের ইস্যু নিয়ে বিজেপিকে কড়া বার্তা দিলেন অভিষেক।
উল্লেখ্য, জনসংযোগ যাত্রা থেকেই তৃণমূলের প্রার্থী ঠিক হবে। সাধারণ মানুষ গোপন ব্যালটে নিজেদের প্রার্থী বেছে নেবেন। মানুষের কাছে পৌঁছে সরাসরি মতামত নেওয়া হবে। আর দলীয় অধিবেশনে জেলা থেকে বুথ নেতৃত্ব সবাইকে ডেকে তাদের মতামত নেওয়া হবে। প্রথম সভা কোচবিহারের দিনহাটার সাহেবগঞ্জে হবে। এখান থেকেই অভিষেক বলেন, “আমি চাই রক্তপাতহীন পঞ্চায়েত নির্বাচন হোক। আর তার জন্য চাই সঠিক প্রার্থী নির্বাচন। তাই মানুষের কাছে যাচ্ছি। আইন সবার উপরে। আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নন।” ইদানিং শুভেন্দু অধিকারী প্রায়শই তৃণমূলকে আক্রমণ করছেন। এপ্রসঙ্গে অভিষেক জানিয়ে দিলেন, “বিরোধী দলনেতা কী বলছেন, তার জবাব মানুষ দেবে। বিরোধী দলনেতা আগে প্রার্থী ঠিক করুন। সেটা করতে না পারলে আবার আদালতে ছুটতে হবে ভোট বিলম্ব করতে।”
প্রসঙ্গত, আজ কলকাতা থেকে কোচবিহার পৌঁছে যান অভিষেক। সেখানে পায়ে হেঁটে মদনমোহন মন্দিরে গিয়ে পুজো দেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, উদয়ন গুহ–সহ জেলার তৃণমূল নেতারা। তাঁর কথায়, ‘”বিরোধীরা তো এইটুকু। ওদের নিজেদেরই দলের মধ্যে দল, তার মধ্যে উপদল লেগেই রয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসকে দেখে বরং ওরা পঞ্চায়েত নির্বাচনে কোথায়, কাকে প্রার্থী নির্বাচন করবে সেটা ভেবে দেখুন। গণতন্ত্রে প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী, আমি, বিরোধী দলনেতা কেউ শেষ কথা নয়। শেষ কথা হল মানুষ। তাই সময় অপচয় না করে গঠনমূলক কিছু করুক বিজেপি।” এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তখনই বিজেপির বাংলা ভাগের কৌশল নিয়ে প্রশ্ন করা হলে পদ্মশিবিরকে কড়া বার্তা দেন তিনি। “কোচবিহার থেকে কাকদ্বীপ একটাই বঙ্গ, সেটা পশ্চিমবঙ্গ। বাংলায় কিছু রাজনৈতিক দল আছে, যাঁরা নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করতে বিভিন্ন জেলা, বিশেষ করে যে শব্দবন্ধ ব্যবহার করে উত্তরবঙ্গ। আমি এই শব্দবন্ধটার ঘোর বিরোধী। আমি বলেছি, বাংলায় গৌড়বঙ্গ, উত্তরবঙ্গ, দক্ষিণবঙ্গ বলে কিছু নেই। কোচবিহার থেকে কাকদ্বীপ একটাই বঙ্গ, সেটা পশ্চিমবঙ্গ”, স্পষ্ট বার্তা তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের।