বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশে সরকারি গণবিবাহের আসরে তুমুল বিতর্ক। বিয়ের আগে পরীক্ষা করে দেখা হয় কনেরা অন্তঃসত্ত্বা কি না। বেশ কয়েক জন তরুণী সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হননি। এর পর তাঁদের বিয়ে বাতিল করা হয়। মধ্যপ্রদেশ সরকারের গণবিবাহ/ নিকাহ যোজনায় এমন পরীক্ষার আদৌ নিয়ম নেই। এই কারণে বিয়ে বাতিলের ঘটনাও আগে ঘটেনি। ফলে রাজ্যজুড়ে শোরগোল শুরু হয়েছে। শাসক দল বিজেপিকে তোপ দেগেছে বিরোধীরা। তাদের দাবি, বেআইনি ভাবে বিয়ের আসরে অন্তঃসত্ত্বা পরীক্ষা হয়েছে।
শিবরাজ সিংহ চৌহান সরকারের আমলে মধ্যপ্রদেশে শুরু হয় গণবিবাহ প্রকল্প ‘মুখ্যমন্ত্রী কন্যাদান যোজনা’। মূলত অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল শ্রেণির তরুণ তরুণীদের বিয়ের ব্যবস্থা করা হয় এই প্রকল্পের আওতায়। যাবতীয় খরচ বহন করে সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতর। বিয়ের জন্য আগেভাগে নাম নথিভুক্ত করাতে হয়। পরিবারের তরফে পাত্রপাত্রী স্থির করা হয়। বিতর্ক চরমে ওঠে ডিন্ডোরী জেলার গাড়াসরই গ্রামে সরকারি গণবিবাহ অনুষ্ঠানে।
২২ এপ্রিল গণবিবাহের আসর বসে সেখানে। বিয়ের জন্য মোট ২১৯ জন তরুণী নাম নথিভুক্ত করেছিলেন। নিয়ম মতো তাঁদের জন্য পাত্রও ঠিক ছিল। কিন্তু অভিযোগ, বিয়ের আসরে কনেদের প্রত্যেককে অন্তঃসত্ত্বার পরীক্ষা করানো হয়। যদিও সরকারি গণবিবাহ প্রকল্পে এমন নিয়ম নেই। এখানেই শেষ নয়, পরীক্ষার পর পাঁচ জন তরুণীর রিপোর্ট ইতিবাচক আসায় তাঁদের বিয়ে বাতিল করা হয় বলেও অভিযোগ। বাতিল হওয়া তরুণীদের বক্তব্য, বিয়ে স্থির হওয়ার পর হবু স্বামীর সঙ্গে থাকতে শুরু করেছিলেন তাঁরা। সেই কারণে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। এমন পরীক্ষা হবে এবং তার জন্য বিয়ে বাতিল হতে পারে, তাঁরা ভাবেননি।
এই ঘটনায় বিজেপি সরকারকে একহাত নিয়েছে বিরোধীরা। তাদের প্রশ্ন, কেন আইন ভেঙে গণবিবাহের আসরে অন্তঃসত্ত্বার পরীক্ষা হল? কার নির্দেশে এই কাজ? জবাব দিতে হবে মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানকে। কংগ্রেস বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী ওমকার মারকম বলেন, ‘এই পরীক্ষা করিয়ে কার্যত তরুণীদের অপমান করেছে সরকার’। এই বিষয়ে স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানেরও বক্তব্য, ‘এটা মহিলাদের অপমান’।