২০০২ সালে সবরমতী এক্সপ্রেসে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার পর থেকেই ব্যাপক সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা শুরু হয় গোটা গুজরাত জুড়ে। আর সেই সময়েই গণধর্ষণ করা হয় ২১ বছর বয়সি তরুণী বিলকিস বানোকে। গত বছর ১৫ আগস্ট, স্বাধীনতা দিবসে সেই গণধর্ষণ কাণ্ডের ১১ জন দোষীকে জেল থেকে মুক্তি দিয়েছে গুজরাতের বিজেপি সরকার। তিন মাস পরের বিধানসভা ভোটে বিজেপির প্রচারে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল ঘৃণ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত ওই আসামিরা। পিছিয়ে নেই কর্ণাটকের বিজেপি সরকারও। ভোটমুখী ওই রাজ্যে ঘৃণা ভাষণ এবং সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার ৩৮৫টি মামলায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলাই প্রত্যাহার করে নিয়েছে বিজেপি সরকার। অভিযুক্তদের বেশিরভাগেরাই কট্টর হিন্দুত্ববাদী বিভিন্ন সংগঠনের সক্রিয় নেতা-কর্মী।
তথ্য জানার অধিকার আইনে আবেদন করা প্রশ্নের জবাবে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতর জানিয়েছে, ২০১৯-এর জুলাই থেকে চলতি বছরের মধ্যে ৩৮৫টি ফৌজদারি মামলা সরকার সাতটি অধ্যাদেশ জারি করে প্রত্যাহার করে নিয়েছে। এরমধ্যে ঘৃণা, বিদ্বেষমূলক ভাষণের মামলা আছে। আছে গো-হত্যা বন্ধে নজরদারির নামে মারধর, ভয়-ভীতি প্রদর্শন এবং সাম্প্রদায়িক হিংসায় যুক্ত থাকার অভিযোগ। রামনবমী, হনুমান জয়ন্তী পালন নিয়ে অশান্তির ঘটনার মামলাও ছিল বেশ কয়েকটি। ছিল টিপু সুলতানের জন্মজয়ন্তী পালন ঘিরে অশান্তি, ধর্মান্তকরণের অভিযোগ তুলে হিংসা ইত্যাদি।
তবে এরই মধ্যে বিজেপি সরকারকে অস্বস্তিতে ফেলেছেন নিম্ন আদালতের একজন বিচারক। মামলা প্রত্যাহারের সরকারি আদেশ মেনে নিম্ন আদালতগুলি পদক্ষেপ করলেও উত্তর কর্নাটকের সিরসির একজন ম্যাজিস্ট্রেট সাম্প্রদায়িক হিংসার একটি মামলা প্রত্যাহার করতে রাজি হননি। সেই মামলায় অভিযুক্ত ৬৬ জনের বিরুদ্ধে বিচার চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। যদিও বেশিরভাগ বিচারকই সরকারি সিদ্ধান্তে সিলমোহর দিয়েছেন। এই সব মামলাই প্রত্যাহার করা হয়েছে বিজেপির দুই মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদুরাপ্পা এবং বাসবরাজ বোম্মাই মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময়। সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছে, মামলা প্রত্যাহারের ফলে এক হাজারের বেশি হিন্দুত্ববাদী নেতা-কর্মী উপকৃত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে বিজেপির সাংসদ প্রতাপ সিমহা ও বিধায়ক রেণুকাচার্য আছেন।