আর বেশি দেরি নেই। সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন সারা বাংলাজুড়ে। সরগরম রাজ্য-রাজনীতি। ভোটের প্রাক-লগ্নে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে তাৎপর্যপূর্ণ বার্তা দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। জানালেন, পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থী বাছাই হবে একেবারেই জনমতের ভিত্তিতে। নিজেদের প্রার্থী বেছে নিতে পারবেন নিজেরাই। আর এমন বেনজির পরিকল্পনা নিয়ে নয়া কর্মসূচী শুরু করল শাসকদল। যার নাম হল ‘তৃণমূলে নবজোয়ার’। বৃহস্পতিবার তৃণমূল ভবন থেকে এই কর্মসূচীর সূচনা করলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সাংবাদিক বৈঠকে তিনি জানান, ”নিজেদের পছন্দের প্রার্থী বেছে নেওয়ার সুযোগ এর আগে বাংলা কেন, ভারতে কখনও কোথাও হয়নি। এটা হবে মানুষের পঞ্চায়েত। ৬০ হাজার গ্রামীণ বুথে মানুষের মতামতের ভিত্তিতে প্রার্থী বাছাই হবে। গোপন ব্যালটে আপনারা পছন্দের প্রার্থীকে। আমি দু’মাস রাস্তায় থাকব। কলকাতায় ফিরব না।”
উল্লেখ্য, এই ‘তৃণমূলে নবজোয়ার’ কর্মসূচীর অন্যতম অংশ হল ‘গ্রামবাংলার মতামত’। উত্তর থেকে দক্ষিণ বাংলা, কোচবিহার থেকে কাকদ্বীপ পর্যন্ত চলবে এই জনসংযোগ যাত্রা। সামগ্রিক কর্মসূচীর রূপরেখা ঠিক করে দিলেন অভিষেক। একঝলকে তা দেখে নেওয়া যাক :
২৪শে এপ্রিল – রাতে কলকাতা থেকে কোচবিহার যাচ্ছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পরদিন মদনমোহন মন্দিরে পুজো দিয়ে শুরু কর্মসূচী। এরপর দিনহাটা, থেকে মাথাভাঙা সফর। এই জেলায় ২ দিন থাকবেন তিনি।
রোজ সকাল ১০টায় বেরিয়ে ৩,৪টি জনসভা করবেন। সন্ধেবেলা ৬ টায় ক্যাম্পে ফিরবেন। ওই জেলার ক্যাম্পে বুথ সভাপতি পর্যন্ত ডাকা হবে। ৩০০০-৪০০০ মানুষকে ডেকে কথা বলার পর গোপন ব্যালটে ভোট দেবেন তাঁরা। নাম বা ফোন নম্বর থাকবে না। কাকে প্রার্থী হিসাবে দেখতে চান, তা গোপন ব্যালটে লিখে দেবেন তাঁরা। তার ভিত্তিতে প্রার্থী বাছাই হবে।
কোচবিহার থেকে আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, শিলিগুড়ি হয়ে উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদহে আসবেন অভিষেক। তারপর সেখান থেকে বীরভূম দিয়ে তৃণমূলে ‘নবজোয়ার কর্মসূচি’ শুরু হবে দক্ষিণবঙ্গে।
২৪শে জুন – দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপে শেষ হবে এই কর্মসূচী।
প্রসঙ্গত, তৃণমূলেরএই কর্মসূচীকে রাজনৈতিক মহলের অনেকে কংগ্রেসের ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’র সঙ্গে তুলনা করা হলেও সে কথা উড়িয়ে দিলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। ”আমরা কংগ্রেসের মতো পায়ে হেঁটে বাংলা ঘুরব না। সেটা ২ মাসে করা একেবারেই অসম্ভব। আমরা পঞ্চায়েত স্তরে মানুষের সঙ্গে কথাবার্তা বলে বোঝার চেষ্টা করব, তাঁরা প্রার্থী হিসেবে কাকে চান। সেটাই আমাদের মূল লক্ষ্য। এমন প্রার্থী চাই, যিনি গ্রীষ্ম-শীত-বর্ষা সারাবছর ধরে মানুষের হয়ে কাজ করবে। আমি বুথে বসে ভাবছি, আমার পঞ্চায়েতে দাঁড়ালে দুর্নীতি হবে না, সব পরিষেবা পাব। এটা বড় সুযোগ। এই সুযোগ দেওয়া হচ্ছে মানুষকে। দলের সুপারিশের উপর হল মানুষের সুপারিশ। এর মধ্যে মানুষের মতামত নেওয়া হবে। আর এটাই নবজোয়ার”, জানিয়েছে তৃণমূল সাংসদ।