লোকসভা নির্বাচনের ঠিক আগে ২০১৯ সালে পুলওয়ামা জঙ্গি হামলায় প্রাণ গিয়েছিল ৪০ জনের বেশি বীর সেনা জওয়ানের। সেই ঘটনায় নিরাপত্তায় গাফিলতির অভিযোগ বারবার প্রকাশ্যে এসেছে। এই ইস্যুতে তৎকালীন জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্যপাল সত্যপাল মালিকের সাম্প্রতিক মন্তব্য বিতর্ক আরও বাড়িয়ে তুলেছে। তিনি দাবি করেন, সরকারের গাফিলতিতেই গোটা ঘটনা ঘটে। সেনার তরফে বিমান চাওয়া হলেও তা দেওয়া হয়নি। এবং গোটা ঘটনার পর প্রধানমন্ত্রী তাঁকে জানান, বিষয়টি নিয়ে চুপ থাকতে। ৪ বছর পরও পুলওয়ামার আসল সত্য এখনও অধরা। মর্মান্তিক সেই সত্য প্রকাশ্যে আনার দাবিতে এবার সরব হলেন পুলওয়ামা কাণ্ডে বাংলার দুই শহিদের পরিবার।
পুলওয়ামা কাণ্ডে শহিদ হয়েছিলেন বাংলার ২ বীর জওয়ান। একজন নদীয়ার সুদীপ বিশ্বাস ও দ্বিতীয়জন হাওড়ার বাবলু সাঁতরা। ২৮ বছর বয়সী সুদীপ সিআরপিএফের ৯৮ ব্যাটেলিয়ানের কনস্টেবল ছিলেন। অন্যদিকে ৩৫ ব্যাটেলিয়ানের হেড কনস্টেবল ছিলেন ৪০ বছর বয়সী বাবলু। সুদীপের বাবা ৬৮ বছর বয়সী সন্ন্যাসী বিশ্বাস এদিন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি জানি না বাস্তবে ঠিক কী হয়েছিল। তবে এই ৪ বছরে নিরাপত্তায় গাফিলতির বিষয়ে আমি অনেক কিছুই শুনেছি। তবে নিশ্চিতভাবে এখনও কিছুই সামনে আসেনি। আসল সত্য প্রকাশ্যে আনুক সরকার’। পাশাপাশি সুদীপের বোন ঝুম্পা বলেন, সত্যি কখনও সামনে আসবে না। ৪ বছর পেরিয়ে গিয়েছে, আজও বাহিনীকে সেদিন বিমান দেওয়ার বিষয়ে কেন্দ্র নিশ্চুপ। কেন্দ্রের বিষয়টি পরিস্কার করে বলা উচিত। যদিও আমাদের জন্য এই আর কোনও অর্থ নেই, বিষয়টি আজ শুধু আমাদের ভাইকে হারানোর কষ্ট দেয়’। বর্তমানে শহিদ সুদীপের পাওয়া সরকারি ক্ষতিপূরণের উপর জীবনধারন করে তাঁর পরিবার।
পাশাপাশি বাবলু সাঁতরার স্ত্রী মিতা বিশ্বাস করেন গোটা ঘটনা ঘটেছিল নিরাপত্তার গাফিলতিতে। তিনি বলেন, ‘ঘটনার ৪ বছর পেরিয়ে গেলেও এই বিষয় আজও আমার কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ আমি আমার স্বামীকে হারিয়েছি। এবং তিনি আর কখনও ফিরে আসবেন না’। তিনি আরও বলেন, ‘আমি আজও সেই ঘটনার সত্যিটা জানতে চাই। কিন্তু সত্যি কি কখনও প্রকাশ্যে আসবে। আমি এখনও বিশ্বাস করি সেদিন নিরাপত্তায় বড়সড় গাফিলতি হয়েছিল। সেনাবাহিনীর যাত্রা সেদিন স্থগিত করে দেওয়া হয়েছিল প্রচুর বরফ পড়ার কারণে। কিন্তু সেই নির্দেশ অমান্য করার বিষয়টি আজও রহস্যের।