ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দেশজুড়ে বারবার ধর্মীয় মেরুকরণে ইন্ধন জুগিয়েছে মোদী সরকার। ঘটেছে একাধিক বিতর্কিত ঘটনা। এবার বিজেপিশাসিত মধ্যপ্রদেশে এক মন্দিরের দুই মুসলমান কর্মীর উপর নেমে এল খোদ সরকারের কোপ! দীর্ঘ বছর ধরে মন্দিরের সমস্ত কাজ করেছেন তাঁরা। কিন্তু এবার সরকারের নয়া নির্দেশিকায় সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, মুসলিম ব্যক্তিরা আর কোনও মন্দিরের কাজে অংশ নিতে পারবেন না। ঘটনাটি মধ্যপ্রদেশের মাইহারের মা সারদা মন্দিরের। গত জানুয়ারি মাসে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও বজরং দলের সদস্যরা মধ্যপ্রদেশের মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন। সংস্কৃতি ও ধর্মীয় বিশ্বাস দপ্তরের মন্ত্রী উষা সিং ঠাকুরের সঙ্গে বৈঠক সারেন তাঁরা। তারপরেই দপ্তরের তরফে নতুন নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। মধ্যপ্রদেশ সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, মন্দিরের কোনও কাজেই মুসলিমদের নিয়োগ করা যাবে না। মন্দিরের প্রশাসনিক কমিটিতেও ঠাঁই হবে না মুসলিমদের। ইতিমধ্যেই এই সিদ্ধান্ত নিয়ে তুঙ্গে বিতর্কের ঝড়।
প্রসঙ্গত, দফতরের সচিব পুষ্পা কলেশের সই করা নির্দেশিকা অনুযায়ী, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মা সারদা মন্দিরের কাজ থেকে রেহাই দিতে হবে দুই মুসলিম কর্মচারীকে। স্থানীয় জেলা কালেক্টর অনুরাগ ভার্মা জানিয়েছেন, নির্দেশিকা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। যদিও সরকারের আইনে সাফ বলা আছে, ধর্মের ভিত্তিতে কোনও কর্মীকে তাঁর কাজ থেকে বরখাস্ত করা যাবে না। এই নির্দেশিকার বিষয়ে মুখ খুলতে চাননি মধ্যপ্রদেশের সংস্কৃতি মন্ত্রী উষা। জানা গিয়েছে, মদ ও মাংস বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে চেয়ে আলাদা নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে মাইহারে। উল্লেখ্য, মাইহারের এই মা সারদা মন্দিরের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে কিংবদন্তি সরোদবাদক বাবা আলাউদ্দিন খানের নাম। শক্তি পীঠের অন্তর্গত এই মন্দিরে এসে নিয়মিত সরোদ বাজাতেন তিনি। হিন্দু মন্দির হলেও সমস্ত ধর্মের সহাবস্থান ও মেলবন্ধনের সাক্ষী থেকেছে মা সারদা মন্দির। এবার সরকারি নির্দেশের জেরে সমন্বয়ের সেই আবহমান ঐতিহ্য কালিমালিপ্ত হল বলেই মনে করছেন বিশিষ্টজনেরা।