অদম্য প্রত্যয় ও জেদে ভর করে শেষপর্যন্ত পৃথিবীর দশম উচ্চতম শৃঙ্গ অন্নপূর্ণা জয় করলেন চন্দননগরের পিয়ালী বসাক। কথা ছিল, অক্সিজেন ছাড়াই অন্নপূর্ণায় পৌঁছবেন এভারেস্টজয়ী পিয়ালী। সেইমতো যাত্রাও শুরু করেন। তথাকথিত ‘টেকনিক্যালি টাফ’ অন্নপূর্ণা জয় করা শক্ত জেনেও মনের জোরকে সম্বল করে অক্সিজেন ছাড়াই রওনা দেন এই বঙ্গতনয়া। তাতে বাধা এলেও মিলল সাফল্য। সোমবার সকাল ৮টা ২৫ মিনিটে দুর্গম পথ পেরিয়ে ৮,০৯১ মিটার উচ্চতায় অন্নপূর্ণার চূড়ায় পা রাখেন পিয়ালী। তবে, পুরোপুরি অক্সিজেন ছাড়া সম্পূর্ণ হয়নি আরোহণ। একেবারে শেষ মুহূর্তে প্রাকৃতিক দুর্যোগ সামলে অক্সিজেন নিয়ে শৃঙ্গজয় করেন তিনি।
উল্লেখ্য, চন্দননগরের মেয়ে পিয়ালীর রক্তে রয়েছে পাহাড়ে চড়ার নেশা। সেই নেশার বশেই একের পর এক শৃঙ্গজয় করে চলেছেন তিনি। ২০২২-এ অক্সিজেন ছাড়াই এভারেস্ট জয়ের জন্য অভিযানে বেরিয়েছিলেন তিনি। প্রতিকূলতার মধ্য দিয়েও বিনা অক্সিজেনে এভারেস্টের চূড়ার প্রায় কাছে পৌঁছে গিয়েছিলেন। কিন্তু আবহাওয়া প্রচণ্ড খারাপ থাকায় পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ জয়ের ১০০ মিটার আগে তাঁকে অক্সিজেন নিতে হয়েছিল। এভারেস্ট জয় করার দু’দিন বাদেই তিনি লোৎসে জয় করেন। ২০১৮ সালে পৃথিবীর অষ্টম উচ্চতম শৃঙ্গ মানাসলু জয় করেছিলেন পিয়ালী। ২০১৯ সালে পৃথিবীর সপ্তম উচ্চতম শৃঙ্গ ধৌলাগিরিতে অক্সিজেন ছাড়াই আরোহণ করেন পিয়ালী। এরপর গত ১৬ই মার্চ অন্নপূর্ণা শৃঙ্গজয়ের উদ্দেশে ফের বেরিয়ে পড়েন। দিদির শৃঙ্গজয়ের খবর বাড়িতে পৌঁছতেই খুশির হাওয়া বসাক পরিবারে। আপ্লুত পিয়ালীর বোন তমালী বসাক। “রবিবার দিদির অন্নপূর্ণা শৃঙ্গে আরোহণ করার কথা ছিল। কিন্তু প্রচণ্ড হাওয়া চলতে থাকায় ফিরে আসতে বাধ্য হয়। রবিবার রাতে ফের অক্সিজেন নিয়ে অন্নপূর্ণার উদ্দেশে যাত্রা করে। সোমবার সকাল ৮টা ২৫ মিনিটে শৃঙ্গে আরোহণ করেছে”, জানিয়েছেন তমালী।
