বাংলায় ফের শুরু হয়ে গিয়েছে ভোটের কাউন্টডাউন। আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘিরে ক্রমশ চড়ছে রাজনীতির পারদ। জোরকদমে প্রস্তুতি নিচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলি। তবে বিজেপির ক্ষেত্রে চিত্রটা সেই একইরকম। অস্বস্তিতে অব্যাহত বঙ্গ গেরুয়াশিবিরে। বুথ সশক্তিকরণ অভিযান করেও বহু বুথে পৌঁছতেই পারল না বিজেপি। দলের রাজ্য পদাধিকারী বৈঠকে বুথে পৌঁছতে দলের খামতির কথা স্বীকার করে নিলেন রাজ্য নেতারা। সূত্রের খবর, গড়ে মাত্র ৪০ শতাংশ বুথে পৌঁছনো গিয়েছে। হাওড়া, হুগলি, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় মাত্র ১৫ শতাংশ বুথে পৌঁছনো গিয়েছে। ফলে পরিস্থিতি এমন জায়গায় দাঁড়িয়েছে যে, বুথ সশক্তিকরণ অভিযানে আবার দ্বিতীয় দফায় নামতে হচ্ছে বঙ্গ বিজেপিকে। যা নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই ক্ষুব্ধ দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এমন অবস্থা যে, খামতির কথা বৈঠকের রিপোর্টিংয়েও উল্লেখ করা হয়েছে। কত বুথে যাওয়া যায়নি, সেই হিসেবও মেলেনি জেলাগুলির কাছ থেকে। সূত্রের খবর, বৈঠকে দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) সতীশ ধন্দ রাজ্য নেতাদের বলেন, আবার একদফায় এই বুথ সশক্তিকরণ কর্মসূচী নিতে হবে।
পাশাপাশি, এদিনের বৈঠকে সকলকে খবর দেওয়া হয়নি বলে দলের একাংশ ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বলে জানা গিয়েছে। এদিকে, বুথ কমিটির রিপোর্ট সত্য না অর্ধসত্য, তা নিয়ে সম্প্রতি দলের ভার্চুয়াল বৈঠকেও সংশয় প্রকাশ করেছিলেন রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা মঙ্গল পাণ্ডে। জেলা সভাপতি, বিভাগ ও জেলা ইনচার্জদের উপস্থিতিতে দলের কেন্দ্রীয় নেতার এই ধরনের মন্তব্য নিয়ে রীতিমতো চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছিল গেরুয়া শিবিরে। সূত্রের খবর, ৫০ শতাংশ বুথে কমিটি হয়েছে বলে রাজ্য বিজেপির তরফে রিপোর্ট দেওয়া হয় কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকদের। কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মঙ্গল পাণ্ডে ও অমিত মালব্য। ৫০ শতাংশর মতো বুথে কমিটি হয়েছে, এই রিপোর্ট শোনার পরই মঙ্গল পাণ্ডে রাজ্য নেতাদের উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘‘রিপোর্টিং তো খুব ভাল হয়। কিন্তু দেখতে হবে, এতে কতটা সত্যতা আছে। পুরোটা যাচাই করা হবে।’’ এরপর প্রবল অস্বস্তিতে পড়ে বঙ্গ বিজেপি-নেতৃত্ব। তাদের নিচুতলায় সংগঠনের তথৈবচ দশা ইতিমধ্যেই বারবার প্রকাশ্যে এসেছে। বুথ সশক্তিকরণ অভিযানের আগে ২৫ শতাংশ মতো বুথে কমিটি হয়েছিল। এবার দাবি করা হয়েছে, ৫০ শতাংশ বুথে কমিটি হয়ে গিয়েছে। কিন্তু রাজ্য নেতৃত্বের রিপোর্টের উপর যে কেন্দ্রীয় নেতারা আস্থা রাখতে পারছেন না, তা বলাই বাহুল্য।