আলিপুরদুয়ারের ১ নম্বর ব্লকের বাবুরহাট মাঠের সভায় তখন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সামনে দর্শকাসনে মানুষের ভিড় উপচে পড়েছে। প্রিয় নেতাকে কাছ থেকে দেখার উন্মাদনায় টগবগ করছেন তৃণমূলের লাখো-লাখো কর্মী সমর্থকেরা! মঞ্চ থেকে জনতার উদ্দেশ্যে অভিষেক বললেন, ‘৯ মাস আগে ধুপগুড়িতে একটা সভা করে গিয়েছিলাম। সেখানে রাজনৈতিক কথা বলব না বলেছিলাম। আজ আমি রাজনৈতিক বক্তব্য রাখব। তবে আগেও আমি ভোট চাইনি, আজও আমি ভোট চাইব না। বিজেপি দল ও সরকার যে ভাবে মানুষকে ভাতে মারার কৌশল নিয়েছে, তার বিরুদ্ধে আমি আজ মুখ খুলবই।’
গত ফেব্রুয়ারি মাসে উত্তরবঙ্গ সফরে এসেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কোচবিহারের পরে এ বার আলিপুরদুয়ারে সভা! অভিষেকের কথায়, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেড রোডে ধর্ণায় বসেছিলেন। আমি নিজে ২৫ সাংসদ নিয়ে কেন্দ্রের গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। যদিও তিনি দিল্লিতে ছিলেন। দেখা করেননি। হয়তো আমাদের প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবেন না বলে দেখা করেননি। আলিপুরদুয়ার জেলা লোকসভা ও বিধানসভায় আপনারা বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন। এই সভা থেকে বলব, ইডি, সিবিআই, এন আই এ, বিএসএফ দিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার চালান৷ একশ দিনের কাজের টাকা ছাড়ুন। যারা এদের সঙ্গে যুক্ত, তাদের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্ত করুন। এরা বাংলায় ভোটে হেরেছে। বাংলার মানুষ বাড়া ভাতে ছাই দিয়েছে। এই হার ওরা সহ্য করতে পারছে না। রাজনৈতিক ভাবে লড়ুন। কিন্তু বাংলার মানুষকে ভাতে মারতে দেব না৷ যেখানে যেতে হয় যাব। আগামী কয়েকদিনে এই আন্দোলন দিল্লিতে সংঘটিত করে হবে’।
পঞ্চায়েত ভোটের আগে এবার এই জেলাগুলিতেই বাড়তি নজর দিচ্ছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তথা তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। শনিবারের সভায় অভিষেকের কথায়, ‘বুথ সভাপতি, অঞ্চল সভাপতি, ব্লক সভাপতিদের অনুরোধ করব, প্রত্যেক বুথে কারা ১০০ দিনের কাজে শোষিত ও অবহেলিত তার তালিকা তৈরি করে মানুষের কাছে কাছে যান। বিস্তারিত চিঠি করুন, প্রধানমন্ত্রী ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রীকে। ২০ লাখ পরিবার কাজ করে বসে আছে। এদের টাকা আটকে রেখেছে। ২ কোটি ৬২ লক্ষ মানুষের কাছে আমাদের যেতে হবে। ১৬ এপ্রিল থেকে এই কর্মসূচী শুরু হবে। বুথ সভাপতিরা বুথে বুথে যাবে। এক মাসে এক কোটি চিঠি তৈরি করে রাখুন। এক মাস পরে আমার প্রতিনিধি সেই চিঠি আনবে। আমি সেই চিঠি নিয়ে দিল্লি যাব। দেখি কানে তুলো দিয়ে বসে থাকতে পারে কিনা। যারা ১০০ দিনের কাজে চুরি করেছে, তাদের চিহ্নিত করে জেলে ঢোকান। তৃণমূল কংগ্রেস, বিজেপি-র মতো, চোরেদের বুকে আগলে রাখে না।’