ফের মহানুবতার নজির গড়লেন তৃণমূলের জনৈক পঞ্চায়েত প্রধান। দারিদ্র্য সীমার নীচে থেকেও সরকারি আবাস যোজনার সুবিধা নেননি তিনি। মাটির ভাঙা বাড়িতেই তিন মেয়ে, স্ত্রী নিয়ে বসবাস তাঁর। ইট ভাটায় শ্রমিকের কাজের পাশাপাশি নিজের সামান্য জমি আবাদ করেই পরিবার নিয়ে সুখী পঞ্চায়েত বালুরঘাটের ভাটপাড়ার প্রধান মুকুল বর্মন। দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট ব্লকের ৫ নম্বর ভাটপাড়া পঞ্চায়েত তৃণমূলের দখলে। এই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মুকুল বর্মন। চেহারার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে একেবারে সাধারণ তাঁর জীবনযাপন। রোজ বাড়ি থেকে পঞ্চায়েত কার্যালয়ে পৌঁছতে তার একমাত্র ভরসা সাইকেল। মানুষকে সরকারি পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব বহণ করলেও তিনি নিজে কাজ করেন ইট ভাটায়। এর ফাঁকে নিজের সামান্য জমিতে চাষও করেন মুকুলবাবু। গ্রামবাসীদের সুবিধার্থে অফিসের সিল প্যাড নিজের সঙ্গেই রাখেন। শংসাপত্র-সহ যাবতীয় কাজ নিজের কাজের ফাঁকেই সম্পন্ন করেন তিনি।
মুকুল বর্মন জানিয়েছেন, “ইট ভাটার পাশাপাশি আগে মানুষের বাড়িতে দিনমজুরি কাজ করতাম। সময়ের অভাবে এখন দিনমজুরি করি না বটে, কিন্ত ইট ভাটায় শ্রমিকের কাজ করি এখনও। সেইসঙ্গে বাবার দু’বিঘা জমির মধ্যে এক বিঘায় চাষ করি। তবে এতে মানুষের পরিষেবায় ঘাটতি রাখিনি। অফিস বাড়ি তো বটেই, প্রয়োজনে আমি কর্মক্ষেত্রে থেকেও প্রয়োজনীয় যা কাজ করে দিই। সরকারি আবাস যোজনার আওতায় আসার সুবিধা থাকা স্বত্বেও মাটির বাড়িতে থাকা নিয়ে তার উত্তর, “আমি নেব কেন? গ্রামের অনেকে বাড়ি পাননি এখনও। আমি আগে বাড়ি পেলে অন্যরকম কথা বলবে লোকে। তারা আগে পাক। পরে আমারটা দেখা যাবে।” বাইক কেনার প্রশ্নে প্রধান একগাল হেসে জানান, “ইচ্ছা কার না হয়? তবে টাকা পয়সা নেই আমার।” মুকুল বর্মনের ভূয়সী প্রশংসা করেন গ্রামবাসী রাম প্রসাদ বর্মন। “প্রধানের কাছে কোনও কাজ নিয়ে গেলে অহেতুক কাউকে ঘুরতে হয় না। তাঁর অত্যন্ত সাধারণ জীবনযাপনে আমরা আপ্লুত। নিজের জন্য নয়, তিনি কাজ করেন গ্রামের মানুষের জন্য। তাঁকে আবার প্রধান হিসেবে দেখতে চাইছি আমরা”, জানিয়েছেন তিনি।