বাংলাজুড়ে বাল্যবিবাহ রোধ করতে তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ নিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। সম্প্রতি এক পরিসংখ্যান বলছে, এখনও রাজ্যে বাল্যবিবাহের হার প্রায় ৪১ শতাংশ। দক্ষিণ ২৪ পরগনা, মালদহ, মুর্শিদাবাদ-সহ বেশ কয়েকটি জেলায় বাল্যবিবাহের প্রবণতা সর্বাধিক। এবার স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের বাল্যবিবাহ রোধ করার দায়িত্ব দেওয়া হল। রাজ্যের পঞ্চায়েত দপ্তরের ডব্লুবিএসআরএলএম-এর সঙ্গে ইউনিসেফের যৌথ উদ্যোগে এই কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে। প্রায় ৪০ হাজার মহিলাকে এই কাজে সামিল করা হবে। তাঁদের নিজের নিজের এলাকায় নজরদারির দায়িত্ব দেওয়া হবে। আপাতত পরীক্ষামূলকভাবে কয়েকটি বাছাই করা এলাকায় এই কাজ শুরু হতে চলেছে বলে জানা গিয়েছে। ফলাফলের উপর ভিত্তি করে পরবর্তীকালে কাজের পরিসর বাড়ানো হবে। সঙ্ঘগুলিকে তালিকা তৈরি করতে বলা হয়েছে। এলাকায় ১০ থেকে ১৮ বছর বয়সি কতজন মেয়ে রয়েছে, তাদের নাম তালিকাভুক্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পাশাপাশি, কতজন মেয়ে স্কুলে যাচ্ছে, কতজন অবিবাহিত ইত্যাদি তথ্যও সংগ্রহ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতি মাসে এ নিয়ে করা হবে বৈঠক ও পর্যালোচনা। বাল্যবিবাহ ঠেকানোর কাজে ১১০টি গ্রাম পঞ্চায়েতের সঙ্ঘ সমবায় সমিতির অধীনে থাকা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের ব্যবহার করা হবে। মূলত একেকটি সঙ্ঘের অধীনে ২৫০টি করে গোষ্ঠী থাকে। কীভাবে তাঁরা কাজ করবেন, সে বিষয়ে ইতিমধ্যেই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। পরিবার থেকেই তাঁরা এই অভিযান শুরু করবেন, এমনটাই প্রশাসনের ভাবনা। মহিলারা প্রথমে তাঁদের নিজের পরিবার, আত্মীয়স্বজনদের মধ্যে খোঁজখবর নেবেন। প্রতিবেশীদের মধ্যে বা পাড়ায় আশপাশের বাড়িতে নাবালিকার বিয়ে দেওয়া হচ্ছে কিনা, সেদিকেও লক্ষ্য রাখবেন তাঁরা। এতে বাল্যবিবাহের প্রবণতা অনেকটাই কমবে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।