মাস কয়েক আগে পূর্ব বর্ধমান সফরে গিয়ে তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনুযোগ করে বলেছিলেন, ‘মিডিয়া শুধু কার কত বড় বাড়ি, কার ক’টা গাড়ি— এসব দেখায়। তৃণমূলের কতজন যে কষ্ট করে সংসার চালায়, মাটির ঘরে থাকে, সেগুলো তো দেখায় না! উচিত দু’টোকে পাশাপাশি দেখানো। নইলে সত্যের অপলাপ হয়। আর অর্ধসত্য গর্ধসত্যের সমান।’ সেই সভায় তিনি মেমারির এক মহিলা পঞ্চায়েত প্রধানের কথাও উল্লেখ করেছিলেন। যাঁর বাস টালির চালের ঘরে। স্বামীর কিডনির অসুখের চিকিৎসার জন্য যাঁকে সামান্য গয়না বিক্রি করতে হয়েছে।
কথা হচ্ছে বালুরঘাটের ভাটপাড়া পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রধান মুকুল মুর্মুর। তিনি ইটভাটার শ্রমিক। ছাঁচের কাজ করেন। সাতসকালে বেরিয়ে পড়েন বাড়ি থেকে। সাইকেলে চেপে গাঁয়ে গাঁয়ে ঘোরেন। মানুষের অভাব-অভিযোগ শোনেন। তারপর চলে যান ইটভাটার কাজে। দুপুরের পর তাঁর গন্তব্য সোজা পঞ্চায়েত অফিস। সেখানে প্রশাসনিক কাজ সেরে নিয়ে আবার সন্ধের পর মানুষের দরবারে হাজির হন মুকুল। উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে স্বচ্ছ ভাবমূর্তির জন্য মুকুলকে প্রার্থী করেছিল তৃণমূল। স্থানীয়রা বলছেন, পাঁচ বছর হয়ে গেল মুকুল পঞ্চায়েত প্রধান, জীবনযাপনে কোনও বদল আসেনি। আর মুকুল বলছেন, ‘আমি তো দিদির আদর্শে চলি!’ তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় হামেশাই বলে থাকেন, তৃণমূল করে খাওয়ার জায়গা নয়। তারই যেন জলজ্যান্ত প্রমাণ মুকুল।
