আর মাত্র কয়েকদিনের অপেক্ষা। তারপরই পয়লা বৈশাখ। নতুন বছরের উদযাপনে মেতে উঠবে আপামর বাঙালি। তার আগেই ধর্মতলা, শিয়ালদায় কার্ড, ক্যালেন্ডার ব্যবসায়ীরা পসরা সাজিয়ে বসেছেন। কিন্তু ১৪৩০ এগিয়ে এলেও এখনও বাজারে বাংলা ক্যালেন্ডারের চাহিদা প্রায় নেই বললেই চলে। মাঝে আর মাত্র একটা সপ্তাহ বাকি রয়েছে। এখনও দোকানে বসে এককথায় মাছিই তাড়াচ্ছেন ক্যালেন্ডার ব্যবসায়ীরা। ধর্মতলা থেকে শুরু করে শিয়ালদার বৈঠকখানা বাজার সব জায়গাতেই ছবিটা একইরকম। জিজ্ঞেস করলে কেউ বলছেন, অর্ডার নেই এবারে। আবার কেউ ভাবছেন, আর কয়েকদিন পর বাড়বে বিক্রি।
প্রসঙ্গত, ধর্মতলার টিপু সুলতান মসজিদের পাশে দোকান রয়েছে জনৈক ব্যবসায়ীর। খানিক হতাশার সুরেই তিনি জানালেন, “অর্ডার হবে কী করে? কাগজের দাম অনেক বেড়ে গিয়েছে এখন। কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমাদের বিক্রিও করতে হচ্ছে বেশি দামে। যেখানে আগে আমাদের কেনা পড়ত প্রতি পিস ১২ টাকা, এখন সেটা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ২০ টাকায়। খদ্দের এসে দাম শুনে চলে যাচ্ছেন। আগে যেখানে ন্যূনতম ১০০০ টাকা খরচ হত, এখন খদ্দের এসে শুনছেন ২২০০ টাকার কমে হবে না। ১২০০ টাকা বেশি দিয়ে তাঁরা কেন কিনবেন বলুন।” তবে ঠিক উল্টো কথা জানালেন ওই এলাকারই আর এক ব্যবসায়ী। দোকান ফাঁকা থাকলেও বললেন, “২০ টাকা করে ক্যালেন্ডারের দাম। বিক্রিও ভালই হচ্ছে। আরও বাড়বে আশা করছি। গত দু’বছর ব্যবসা এতটাই খারাপ ছিল, এবারে যা হচ্ছে সেটাই আমার কাছে লাভ।”
পাশাপাশি, ক্যালেন্ডার কেনার ভিড় দেখা গেল না শিয়ালদার বৈঠকখানা বাজারেও। রাস্তার দু’ধারে লাইন দিয়ে দোকান রয়েছে কার্ড, ক্যালেন্ডারের। তবে অধিকাংশের মতেই, ব্যবসা এবারে মন্দার দিকে। স্থানীয় এক ব্যবসায়ী জানালেন, “এখন আর কেউ হালখাতা করেন না। ব্যবসার মন্দা থেকে অনেকে হালখাতা করাই বন্ধ করে দিয়েছেন। হালখাতা না হলে আর আমাদের ব্যবসা কী করে হবে বলুন।” উল্লেখ্য, যুগের সঙ্গে সঙ্গেই বদলে গিয়েছে নববর্ষ। জাল বিছিয়েছে ইন্টারনেট। কার্ডের বদলে এখন সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমেই শুভেচ্ছা বিনিময় হচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়া মারফত নিমন্ত্রণপত্র পাঠাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।