ক্ষমতায় আসার পর থেকেই রাজ্যবাসীর জন্য একাধিক জনমুখী প্রকল্পের সূচনা করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেগুলির মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় প্রকল্প হল ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’। এর সুবাদে ইতিমধ্যেই লাভবান হচ্ছেন রাজ্যের হাজার হাজার মহিলা। এমতাবস্থায় আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগেই এবার এই প্রকল্পের নিয়মে বড়সড় পরিবর্তন আনল রাজ্য সরকার। গত ১লা এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে সরকারের ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচী। এদিকে, এই কর্মসূচীতে যে প্রকল্পগুলির জন্য সবথেকে বেশি আবেদন জমা পড়ে, তার মধ্যে একদম প্রথমসারিতে রয়েছে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পটি। এমতাবস্থায়, এতদিন যাবৎ লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের সুবিধা পেতে হলে উপভোক্তাদের স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকা বাধ্যতামূলক ছিল। তবে, এবার সেই নিয়মেই বদল আনতে চলেছে রাজ্য। ইতিমধ্যেই ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচী শুরু হতেই রাজ্য সরকারের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয় যে, এখন থেকে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড না থাকলেও লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা পাবেন আবেদনকারীরা। স্বাভাবিকভাবেই এই নিয়ম বদলের জেরে উপকৃত হবেন আরও বেশি সংখ্যক মহিলা। কারণ এমন অনেকেই ছিলেন যাঁদের এখনও পর্যন্ত স্বাস্থ্যসাথী কার্ড ছিল না।
এর ফলে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের ক্ষেত্রে আবেদন জানানোর আগে তাঁদের স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের জন্য আবেদন করতে হচ্ছিল। সময় লাগার পাশাপাশি বাড়ছিল জটিলতাও। তবে, এবার সেই চাপ অনেকটাই কমবে। পাশাপাশি, যাঁরা এই প্রকল্পের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছিলেন তাঁরাও লাভবান হবেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, এই প্রথমবার দুয়ারে সরকারের শিবিরে অভিযোগ জানানোর জন্য থাকবে অভিযোগ বক্স। যার মাধ্যমে উপভোক্তারা কোনো প্রকল্পের সুবিধা না পেলে তা খতিয়ে দেখা হবে। জানা গিয়েছে, ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচীর প্রথম দিনই রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে খাদ্যসাথী, স্বাস্থ্যসাথী, বিধবা ভাতা সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রায় ৫.৫ লক্ষ আবেদনপত্র জমা পড়েছে। যার মধ্যে শুধুমাত্র লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের জন্যই ১ লক্ষ ৩৫ হাজার আবেদনপত্র জমা পড়েছে রাজ্য জুড়ে। এমতাবস্থায়, লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের নিয়ম বদলের মাধ্যমে আরও বেশি সংখ্যক মহিলাকে এই প্রকল্পের আওতায় নিয়ে আসার পদক্ষেপ গ্রহণ করছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। যা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
