দ্রুত পদক্ষেপের পথে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। এবার উত্তরবঙ্গের চা বাগানগুলির দীর্ঘদিনের সমস্যার সুরাহা হতে চলেছে। এই সমস্যাগুলি বাম আমল থেকে চলে আসছিল। এর ফলে উপকৃত হবেন তরাই ও ডুয়ার্সের প্রায় ১০ হাজার পরিবার। ২০০১ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত এই অঞ্চলে যে নতুন চা বাগানগুলি তৈরি হয়েছে, তার সিংহভাগেরই সরকারি স্বীকৃতি নেই। কারণ, এগুলি সাধারণত গড়ে উঠেছে শালী বা অন্যান্য জমিতে। সেখানে চা বাগান করতে গেলে সরকারি নথিতেও জমির চরিত্র বদল করতে হয়। আবেদনের পর ভূমি ও ভূমিসংস্কার দফতরের অনুমোদন মিললে তবেই কোনও জমির চরিত্র বদল হয়। সেই প্রক্রিয়া না সম্পন্ন হওয়ায় এই চা বাগানগুলির সরকারি স্বীকৃতি ছিল না। আলিপুরদুয়ার, দুই দিনাজপুর এবং জলপাইগুড়ি জেলার একাংশে এই সময়ের মধ্যে এরকম ৫৫০ থেকে ৬৫০ নতুন চা বাগান মাথা তুলেছে। সেই বাগানগুলির জমিচরিত্রের বদলকে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার
নবান্ন সূত্র অনুযায়ী, বিগত ২০১৭ সালে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে রাজ্য। যা ২০০১ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে জলাজমি ছাড়া অন্যান্য ক্ষেত্রে বিনা অনুমতিতে জমির চরিত্র বদল হয়ে থাকলে, তার ‘পোস্ট ফ্যাক্টো কনভার্সনের’ সম্মতি দেয়। অর্থাৎ, শালী জমিতে কারখানা, বাস্তু ইত্যাদি তৈরি হয়ে গিয়ে থাকলে বা অন্যান্য জমির চরিত্র বদলের পরবর্তীকালিন অনুমতি দেওয়ার প্রক্রিয়া চালু করে রাজ্য। তবে, এর মধ্যে তখন নতুন চা বাগানের জমি অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। সরকারের নয়া সিদ্ধান্তের ফলে চা বাগানের জমির অনুমোদন পেতে আর কোনও বাধা রইল না। চলতি সপ্তাহেই সরকারের শীর্ষস্তরে এই সিদ্ধান্তে সিলমোহর পড়েছে। এর ফলে ৬০০-র বেশি চা বাগানের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত লক্ষাধিক মানুষ উপকৃত হবেন। সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্তাদের কথায়, নতুন চা বাগানগুলির জমির স্বীকৃতি না থাকায় এতদিন কোনও ব্যাঙ্ক ঋণ পাওয়া যেত না। এখন থেকে সেই সুবিধা মিলবে। বাগানের শ্রমিকদের জন্য ‘চা সুন্দরী’-সহ নানা প্রকল্প রয়েছে রাজ্য সরকারের। এখন থেকে সে সুবিধাও মিলবে সহজেই।