ক্রমশ সুসম্পর্কের ভিত পোক্ত হচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও নবীন পট্টনায়েকের। সম্প্রতি উড়িষ্যা সফরে গিয়েছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।তাঁর ব্যবহারে মুগ্ধ উড়িষ্যার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক। এবার বড় সিদ্ধান্ত নিল উড়িষ্যা সরকার। যে দু’একর জমি মমতার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল ‘বিশ্ববাংলা ভবন’ তৈরির জন্য সেটির কোনও মূল্য নেবে না উড়িষ্যা। অর্থাৎ বন্ধুত্বের বার্তা দিতে আরও একধাপ এগিয়ে এলেন নবীন। তাঁর এই মনোভাবে স্বভাবতই খুব খুশি মমতা। যে এলাকায় বাংলাকে জমি দেওয়া হয়েছে সেখানে নতুন এয়ারপোর্ট ও টাউনশিপ তৈরি হচ্ছে। জায়গাটি ‘নতুন পুরী’ নামে চিহ্নিত। এখানে একর প্রতি জমির দাম এক কোটি টাকা। রাজ্যকে অবশ্য কিছুই দিতে হবে না। যদিও রাজ্য টাকা দিয়ে জমি কিনতে প্রস্তুত ছিল। পুরীকে সার্বিকভাবে পর্যটকদের কাছে সহজলভ্য করতে নানা পরিকল্পনা নিয়েছে উড়িষ্যা সরকার। পুরনো বাড়ি ভেঙে চল্লিশ ফুট চওড়া রাস্তা, উড়ালপুল তৈরি হবে। মন্দিরের সিংহদুয়ার থেকে স্বর্গদ্বারের সরাসরি যোগাযোগ স্থাপনে বাধা পুরনো বাড়ি, অপরিসর রাস্তা। পুণ্যার্থীরা যাতে স্বর্গদ্বার থেকে মন্দিরে যেতে পারেন, তার সরাসরি রাস্তা গড়া হবে। রাজ্য যেখানে জমি পেয়েছে সেখানকার পরিবেশ খুব মনোরম। একটি ব্রিজ হলেই সমুদ্র ও মন্দিরের সংযোগ সুগম হবে। এই ব্রিজটি বানানোর কাজ শুরু করেছে উড়িষ্যা সরকার।
পাশাপাশি, পুরী-বাংলার সম্পর্কের ইতিহাস মাথায় রেখে তৈরি হবে রাজ্যের নতুন ভবন। শতাধিক পর্যটক পুণ্যার্থীর থাকার ব্যবস্থা থাকবে। মমতা-নবীন সম্পর্কের এই অভূতপূর্ব সমীকরণ রাজনৈতিক মহলের কাছে বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে। পূর্ব ভারতের দুই জনপ্রিয় মুখ্যমন্ত্রীর এক মনোভাব দিল্লির রাজনৈতিক দলগুলির কাছে মোটেই ভাল খবর নয়। সেই প্রেক্ষিতে বিজেপি এবং কংগ্রেসের ওপর চাপ বাড়াতে এখন থেকে নবীনের সঙ্গে সংযোগ রেখে এগবেন মমতা। নবীনকে তিনি বাংলায় আমন্ত্রণ করেছেন। পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের আদলে দীঘায় একটি মন্দির তৈরি করাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেটির কাজ সরেজমিনে দেখতে সোমবার সমুদ্র শহরে যাচ্ছেন তিনি। আগামী বছর ওই মন্দির উদ্বোধনে নবীনকে আমন্ত্রণ করা হবে। এদিকে সোমবার দীঘা পৌঁছনোর আগে খেজুরি যাবেন মমতা। নন্দীগ্রাম লাগোয়া এই এলাকায় পরিষেবা প্রদান সূচী রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। দীঘাতেই পূর্ব মেদিনীপুরের সাংগঠনিক কর্মীসভা করবেন মমতা।