কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি-সিবিআইকে কড়া ভাষায় কটাক্ষ করলেন তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। টুইটে তাঁর অভিযোগ, ইডি-সিবিআই দু’টি রাজনৈতিক দলের মতো কাজ করছে। কেন্দ্রে তাঁরা বিজেপির সঙ্গে জোট সরকারে রয়েছে, তাই স্রেফ বিরোধীদের বিরুদ্ধে কাজ করছে দুই তদন্তকারী সংস্থা। বাবুলের সুপ্রিয়, “তৎকালীন কয়লামন্ত্রীদের কাছে যাদের বিরুদ্ধে অনেক ‘তথ্য’ দিয়েছিলাম, স্বয়ং কয়লমন্ত্রীর সঙ্গে সেই সব কয়লা মাফিয়াদের আলাপ করানো হচ্ছে।” স্বাভাবিকভাবেই বিজেপির প্রাক্তন সাংসদ তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর প্রশ্নে প্রবল অস্বস্তিতে গেরুয়াশিবির। শক্তিগড়ে শুটআউটের পর এমনিতেই বিজেপি ও কয়লা মাফিয়াদের সম্পর্ক সামনে এসেছে। এমন পরিস্থিতিতে বাবুলের কথায় বিপাকে পদ্ম-নেতৃত্ব। শক্তিগড় শুটআউটে নিহত রাজু ঝাঁয়ের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে ইতিমধ্যেই চাপানউতোর শুরু হয়েছে। বাবুলের অভিযোগ, কৈলাস ও দিলীপের হাত ধরেই বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন রাজু ঝাঁ। তিনি পরপর বেশ কয়েকটি টুইট করেন। প্রথম টুইটে তাঁর দাবি, রাজু ঝাকে নিয়েই তাঁর সঙ্গে বঙ্গ বিজেপির কিছু নেতার চূড়ান্ত মতবিরোধ হয়। সঙ্গে বাবুলের খোঁচা, “রাজুকে ঘটা করে বিজেপিতে যোগদান করায় দিলীপ ঘোষ ও কৈলাস বিজয়বর্গীয়। এবার এরা বলবে ‘চিনি না’!”
উল্লেখ্য, কৈলাস-দিলীপ ছাড়াও বিজেপি বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘড়ুইকেও একহাত নিয়েছেন বাবুল। তাঁর দাবি, রাজুকে বিজেপিতে আনতে মধ্যস্থতা করেছিলেন লক্ষ্মণই। সূত্রের খবর, রাজু ঝাঁ আসানসোল-দুর্গাপুর এলাকায় কয়লা মাফিয়া হিসেবে পরিচিত। গরু পাচারের কিংপিন আবদুল লতিফের সঙ্গেও তাঁর যোগ ছিল বলে সূত্রের দাবি। সিপিএমের হাত ধরে উত্থান। তবে সিবিআই-ইডির নজরে পড়তেই তাঁর রাজনৈতিক কাজকর্ম অনেকটা কমে আসে। বরং সামাজিক কাজে যুক্ত ছিলেন তিনি। ২০২১ সালে নির্বাচনের আগে দিলীপ ঘোষের সভায় বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। ভোটের আগে জান লড়িয়ে দিয়েছিলেন রাজু ঝাঁ। তবু টিকিট পাননি তিনি। তারপর থেকে নিষ্ক্রিয় ছিলেন রাজু। সিআইডির হাতে গ্রেফতারও হয়েছেন রাজু। এই প্রেক্ষিতে বাবুল সুপ্রিয়র আরও প্রশ্ন, “এই সমস্ত দুষ্টু লোকরা কীভাবে ইডি-সিবিআইয়েক তালিকা থাকে উধাও হয়ে যাচ্ছে? এর কোনও যুক্তিযুক্ত জবাব দিতে পারবে বিজেপি?” এপ্রসঙ্গে অবশ্য দিলীপ ঘোষের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে লক্ষ্মণ ঘড়ুই জানিয়েছেন, বাবুল সুপ্রিয় এখন দলে নেই। তাঁর কথার কোনও মূল্য নেই। তবে রাজু-হত্যাকাণ্ড যে বঙ্গ বিজেপিকে প্রবল অস্বস্তিতে ফেলেছে, তা বলাই বাহুল্য।