সেই প্রথম বার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বাংলার প্রতি বিমাতৃসুলভ আচরণ করছে মোদী সরকার। এ রাজ্যের প্রতি দিন দিন কেন্দ্রীয় বঞ্চনার পরিমাণ বেড়েই চলেছে। এবার তারই নয়াচিত্র বাংলার বুকে। গুজরাত, উত্তরপ্রদেশ ও গোয়ার মতো ‘ডবল ইঞ্জিন’ শাসিত গেরুয়া সরকারের রাজ্যগুলিতে ৫০ শতাংশ জব কার্ড আধার লিঙ্ক হয়নি। কিন্তু বাংলায় প্রায় ৯০ শতাংশ জব কার্ড আধার লিঙ্ক করার কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনায় বাংলার শ্রমিকরা তাঁদের ন্যায্য টাকা পাচ্ছেন না। এমনকি নয়া অর্থবর্ষে বাংলার জন্য ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের জন্য ১ পয়সাও বরাদ্দ করা হয়নি। কার্যত কেন্দ্রের অসহযোগিতায় পারিশ্রমিকের টাকা না পেয়ে দিন কাটাচ্ছেন বাংলার খেটে খাওয়া শ্রমিকরা।
উল্লেখ্য, প্রায় বছর খানেক ধরে কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশে রাজ্যের সমস্ত জবকার্ডধারীদের কার্ডগুলি তাঁদের আধার কার্ডের সঙ্গে লিঙ্ক করার কাজ শুরু হয়েছে। দেশজুড়েই চলছে এই কাজ। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির মধ্যে গুজরাত, উত্তরপ্রদেশ ও গোয়াতে মোট জবকার্ডের ৫০ শতাংশও লিঙ্ক করতে পারেনি সেই রাজ্যের সরকার। গুজরাতে মোট জবকার্ডের ২৪ শতাংশ, উত্তরপ্রদেশে ৪৪.৮৭ শতাংশ এবং গোয়াতে ৩৫.৮৯ শতাংশ জবকার্ড আধার লিঙ্ক করা সম্ভব হয়েছে। অথচ সেখানকার শ্রমিকদের ১০০ দিনের কাজের পারিশ্রমিক নিয়মিত দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু বাংলায় ৮৯.৭৮ শতাংশ জবকার্ড আধার লিঙ্ক করেও বাংলার শ্রমিকদের জন্য ১০০ দিনের বকেয়া টাকা বন্ধ করে রাখা হয়েছে। এমনকী চলতি আর্থিক বছরে বাংলার শ্রমিকদের জন্য বাজেট শূন্য করে দিয়েছে কেন্দ্র। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন সময় কেন্দ্রীয় আধিকারিকদের প্রতিনিধিরা বাংলার জেলায় জেলায় এসে ১০০ দিনের কাজের নমুনা পরীক্ষা করে গিয়েছেন। লিখিতভাবে তাঁরা কিছু না জানালেও অধিকাংশ কাজ দেখে তাঁরা সন্তুষ্ট হয়েছেন এবং সেই কথা মৌখিকভাবে রাজ্যের আধিকারিকদেরও জানিয়েছেন। এদিকে আধার লিঙ্কের কাজও শেষের দিকে। তাহলে কেন লিঙ্ক করা আধার কার্ডের শ্রমিকদের পারিশ্রমিকের টাকা দিচ্ছে না কেন্দ্রীয় সরকার? তাই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন প্রশাসনের আধিকারিকরাও।