বাংলায় প্রথমবার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষির পাশাপাশি শিল্পের দিকেও বাড়তি নজর দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের শিল্পায়ন এবং কর্মসংস্থানই যে পাখির চোখ, তা ইতিমধ্যেই স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি। এবার সেক্টর ফাইভের মতো বানতলাকে ঝাঁ চকচকে সেক্টর সিক্স নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে কেন্দ্রের থেকে এক হাজার কোটি টাকার তহবিল চাইছে মমতা সরকার। মুখ্যমন্ত্রী বানতলা চর্মনগরীর নাম রেখেছিলেন ‘কর্মদিগন্ত’। সেই অনুযায়ী চর্মনগরীকে ঘিরে প্রায় ২,৭০০ একর জমিতে ‘বানতলা গ্রিনফিল্ড সিটি, কর্মদিগন্ত’ গড়ে তুলতে চায় রাজ্য। কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। তবে রাজ্য যে এই টাকা পাবেই, তা এখনও নিশ্চিত নয়। কারণ, আরও ২০টি রাজ্যও তাদের ২৫টি নগরের জন্য কেন্দ্রের থেকে তহবিল পাওয়ার প্রতিযোগিতায় নেমেছে।
প্রসঙ্গত, বানতলাকে সেক্টর সিক্স শিল্পনগরী হিসেবে গড়ে তুলতে আগেই রাজ্যের নগরোন্নয়ন দফতরের অধীনে সেক্টর সিক্স (বানতলা) ইন্ডাস্ট্রিয়াল টাউনশিপ অথরিটি তৈরি হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, পুরো চর্মনগরীর কাজ শেষ হলে প্রায় সাড়ে পাঁচ লক্ষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর্মসংস্থান তৈরি হবে। তবে কলকাতার সমস্ত চামড়া শিল্পকে বানতলা চর্মনগরীতে নিয়ে আসার পরে সেখানকার সবথেকে বড় সমস্যা ছিল দূষণ। যদিও গত কয়েক বছরে রাজ্য সরকার বর্জ্য শোধনাগার, জমি ভরাট, পরিবেশ পর্যবেক্ষণ ও অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধ ব্যবস্থায় জোর দিয়েছে।
এবার চর্মনগরীকে কেন্দ্র করে নতুন নগরী গড়ে তুলতে চাইছে রাজ্য। তার জন্য সড়ক, জল সরবরাহ, রাস্তার আলো ও কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার পরিকল্পনা তৈরি হচ্ছে। এই কাজেই কেন্দ্রের থেকে এক হাজার কোটি টাকা চাইছে রাজ্য। কেন্দ্রীয় আবাসন ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রকের বক্তব্য, পঞ্চদশ অর্থ কমিশন দেশে আটটি নতুন শহর গড়ে তোলার জন্য ৮ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিল। প্রতিটি শহরের জন্য খরচ হবে ১ হাজার কোটি টাকা। তবে উত্তর-পূর্ব ও পার্বত্য রাজ্যে দু’টি শহরের জন্য ৫০০ কোটি টাকা করে বরাদ্দ হবে। সেই হিসেবে ন’টি রাজ্য থেকে ন’টি শহরকে বেছে নেওয়া হবে। রাজ্যগুলির মধ্যে প্রতিযোগিতা হবে। মন্ত্রক আগেই যোগ্যতার প্রাথমিক শর্ত, মাপকাঠি বেঁধে দিয়েছিল। জানা গিয়েছে, ২১টি রাজ্যের থেকে ২৬টি শহরের প্রস্তাব এসেছে। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ সরকার বানতলা গ্রিনফিল্ড সিটি, কর্মদিগন্তের প্রস্তাব দিয়েছে।