সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। তুঙ্গে রাজনীতির পারদ। ইতিমধ্যেই জোরকদমে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলি। তবে দুশ্চিন্তা কাটছে না পদ্মপরিবারের অন্দরে। বাংলার গেরুয়া নেতাদের তৈরি করা রিপোর্টে আর আস্থা রাখতে পারছেন না দিল্লীর নেতারা। এর আগেও একাধিক সাংগঠনিক বিষয়ে বঙ্গ বিজেপিকে বিশ্বাস করে ভরাডুবির কবলে পড়েছে দল। তাই অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে দিল্লীর নেতারা আর বাংলার বিজেপি নেতাদের বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন না। আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটের প্রাককালে ১২ই মার্চ থেকে বুথ সশক্তিকরণ অভিযানে নেমেছিল বিজেপি। এই কর্মসূচীর শেষে কেন্দ্রের নেতাদের কাছে বঙ্গ বিজেপি রিপোর্ট পেশ করেছে, সেই রিপোর্টে যথাযথ নয় বলেই মনে করছেন কেন্দ্রীয় নেতারা।
প্রসঙ্গত, ১২ থেকে ২৬শে মার্চ পর্যন্ত বুথ সশক্তিকরণ অভিযান চালিয়েছে বঙ্গ বিজেপি। সেদিন রাতেই কর্মসূচীর ফলাফল জানতে ভার্চুয়াল বৈঠকে বসে দিল্লীর নেতৃত্ব। রাজ্যের জোন এবং বিভাগ পর্যায়ে কত সংখ্যক বুথে ৩১ জনের কমিটি গঠনসহ যাবতীয় সাংগঠনিক কাজকর্ম হয়েছে, তা দিল্লীকে জানিয়েছে রাজ্যের নেতারা। দাবি করা হয়েছে, বিজেপি এখনও পর্যন্ত ৬০ শতাংশ বুথে পৌঁছতে গিয়েছে। ফলে ৪০ শতাংশ বুথে গেরুয়া প্রতিনিধিত্ব কার্যত শূন্য। বাংলার ৭৭ হাজার বুথের মধ্যে ৩২ হাজার বুথে বিজেপির অস্তিত্ব নেই। বঙ্গ বিজেপির ৬০ শতাংশ বুথে পৌঁছনোর দাবি নিয়েই সংশয় প্রকাশ করেছেন বিজেপির বাংলার পর্যবেক্ষক নেতা মঙ্গল পাণ্ডে। তিনি বলেন, এই জাতীয় রিপোর্টিংয়ে অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় বাংলা এগিয়ে থাকে। কিন্তু বাস্তব অন্য কথা বলে। তাই পরিসংখ্যানে জল কতটা, তা মূল্যায়ন করতে রাজ্যের নেতাদের অনুরোধ করছেন তিনি। বিজেপির অন্দরে খবর, বাংলা থেকে নাকি বারবার দিল্লীতে অতিরঞ্জিত রিপোর্ট পাঠানো হয়। ভোট পরবর্তী হিংসায় ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সাহায্যের জন্য যে রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছিল, তাতে ক্ষতিপূরণ প্রাপকের নাম, ঠিকানা, পরিচয় ইত্যাদি নিয়ে প্রচুর ত্রুটি ছিল। সদস্য সংগ্রহ অভিযান, জেলা ও বুথ পর্যায়ে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহের রিপোর্টেও ভুয়ো তথ্য পাঠান রাজ্যের নেতারা। বহু ক্ষেত্রেই রিপোর্ট বাস্তবের সঙ্গে সাদৃশ্যহীন হয়ে দাঁড়ায়। যার ফলস্বরূপ বারবার ভোটের লড়াইয়ে নাস্তানাবুদ হয় গেরুয়াশিবির।