নয়া পদক্ষেপের পথে রাজ্য সরকার। সাম্প্রতিক সময়ে প্রায়শ হাতির তাণ্ডবে প্রাণহানি এবং সম্পদ হানির ঘটনা ঘটছে। রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় হাতির দৌরাত্ম্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।কয়েকদিন আগে জলপাইগুড়িতে এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে হাতির হানায়। এবার হাতির হানা রুখতে আরও সচেষ্ট হচ্ছে রাজ্য বনদফতর। হাতির দলগুলোর যাতায়াতের জন্য বিশেষ করিডর এবং খাদ্যভাণ্ডার তৈরি করবে বনদফতর। হাতির দল যাতে নির্দিষ্টি করিডর দিয়েই যাতায়াত করত সেরকম ব্যবস্থা করা হবে। বনাঞ্চলে হাতিদের খাদ্যের জোগান নিশ্চিত করতে ভাণ্ডার গড়া হবে। সূত্র অনুযায়ী, ইতিমধ্যেই কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রসঙ্গত, খাবারের খোঁজে ঝাড়খণ্ড থেকে হাতির দল দক্ষিণবঙ্গের কয়েকটি জেলায় লোকালয়ের মধ্যে ঢুকে পড়ে। সে কারণে ঝাড়গ্রাম, মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, বেলপাহাড়িতে হাতির খাদ্য ভাণ্ডার তৈরি করা হচ্ছে। উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ারের জঙ্গল সংলগ্ন এলাকায় খাদ্যভাণ্ডার তৈরি করা হবে। বৈদ্যুতিক বেড়া দিয়ে ঘেরা দুই কিলোমিটার ব্যাসার্ধ বিশিষ্ট এলাকার মধ্যে হাতির খাবার হিসেবে কলাগাছ, নানা সব্জি, গাছপালা এবং জল রাখা থাকবে।
পাশাপাশি, হাতিদের সেই এলাকায় যাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট পথ থাকবে। একটি নির্দিষ্ট পথ দিয়ে ঢুকে আরেকটি পথ দিয়ে বনের মধ্যেই চলে যেতে পারবে হাতির দল। মনে করা হচ্ছে, খাবারের পর্যাপ্ত সন্ধান থাকলে হাতির দলের লোকালয়ে চলে আসার প্রবণতা কমবে। জানা গিয়েছে, ঝাড়গ্রামে তিনটি, বাঁকুড়ায় দু’টি, পুরুলিয়াতে তিনটি, পশ্চিম মেদিনীপুরে দু’টি ও বড়জোড়ায় একটি খাদ্যভাণ্ডার হবে। হাতিসহ অন্যান্য জীবজন্তুর যাতায়াতের জন্য উত্তরবঙ্গে মোট আটটি করিডর তৈরি করা হচ্ছে। করিডরগুলি দৈর্ঘ্যে প্রায় সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার এবং চওড়ায় ২০০ মিটার হবে। উত্তরবঙ্গে আটটি করিডরের প্রত্যেকটি তৈরি করতে ২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। দ্রুত কাজ শুরু হবে। এর ফলে একদিকে যেমন বন্যপ্রাণের নিরাপত্তা বাড়বে, অন্যদিকে, সাধারণ মানুষেরও আশঙ্কা কমবে। সেই লক্ষ্যেই এহেন উদ্যোগ নিচ্ছে রাজ্য সরকার।