বাম আমলে চাকরি-দুর্নীতি নিয়ে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল। সুজন চক্রবর্তীর পর অভিযোগের তির ছুটল আরও এক বাম নেতার দিকে। এবার বিতর্কের কেন্দ্রে সিপিএম নেতা তথা তৎকালীন মন্ত্রী সুশান্ত ঘোষ। রাজ্যের কারামন্ত্রী অখিল গিরির অভিযোগ, চিরকুটের মাধ্যমে সুশান্ত ঘোষ পরিবারের একাধিক সদস্যদের চাকরি পাইয়ে দিয়েছেন। এমনকী এদিন একটি তালিকাও সংবাদ মাধ্যমে তুলে ধরেন কারামন্ত্রী। অখিল গিরি বলেন, “ওনার শ্বশুরবাড়ির এবং ওনার ভাই বোন আত্মীয় স্বজন কেউ বেকার নেই। তবে পাপ বাপকেও ছাড়ে না। আর সত্য গোপন থাকে না। এতদিন চুপ ছিলাম সিপিএম নেতারা ইদানিং বড্ড লাফালাফি করছেন। লাল পতাকার তলায় লুকিয়ে তাঁরা কত যে দুর্নীতি করছেন তা বোধহয় ভুলে গিয়েছেন। আমি শিক্ষামন্ত্রীকে তদন্তের আর্জি জানাব।” সংবাদ মাধ্যমের সামনে অখিল গিরির একটি তালিকা প্রকাশ করে অভিযোগ করেন, বিধায়ক এবং মন্ত্রী থাকাকালীন পনেরো বছরে বড়বোন এবং ভগ্নীপতির চাকরি করে দিয়েছেন সুশান্ত। বর্তমানে তাঁরা অবসর নিয়েছেন। সুশান্ত ঘোষের স্ত্রী ছিলেন প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক। বড়বোনের বড় ছেলে অর্থাৎ বামনেতার ভাগ্নে বর্তমানে হাইস্কুলের লাইব্রেরিয়ান। ছোট ভাগ্নে চাকরি করছেন ক্ষীরপাই এলাকার সেচ দফতরে। অখিল গিরির অভিযোগ, তৎকালীন সেচ মন্ত্রীকে দিয়ে এই চাকরি পাইয়ে দিয়েছেন সুশান্ত।
পাশাপাশি অখিল গিরি জানান, সুশান্ত ঘোষের ছোট বোন একটি সরকারি স্কুলে কর্মরতা। মেজবোনের স্বামী গড়বেতার কেশিয়াতে প্রাইমারি স্কুলে চাকরি করছেন। সেজবোনের স্বামী মেদিনীপুর প্রাইমারি বোর্ডে চাকরিরত। সুশান্ত ঘোষের আরও এক বোন আইসিডিএস-এর সুপারভাইজারে চাকরি করছেন। তাঁর স্বামী অর্থাৎ সুশান্ত ঘোষের আরও এক ভগ্নীপতিও সেচ দফতরে চাকরি করছেন। বাম নেতার পিসির দুই ছেলেও সরকারি চাকরি করছেন। শুধু তাই নয়, তাড়া গ্রামের বাসিন্দা সুনীল মালের ভাইয়ের পরিবহন দফতরে চাকরি ও তাঁর মেয়ের চাকরি করিয়ে দিয়েছেন সুশান্ত ঘোষ, এমনটাই অভিযোগ করছে অখিল। একই সঙ্গে বামনেতার মামাতো ভাই অতনু খামরুই ও তাপস খামরুই পরিবহন দফতরে চাকরিরত, সে তথ্যও তুলে ধরেছেন রাজ্যের কারামন্ত্রী। জানিয়েছেন, প্রাক্তন বাম মন্ত্রী সুশান্তর এক শ্যালিকা মেদিনীপুর এক্সচেঞ্জ অফিসে পিওনের চাকরি করেন। ছোট শ্যালিকার ভাই হাইস্কুলে চাকুরিরত। পাশাপাশি ওনার বড় শ্যালক অরবিন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় পাটির জেলা কমিটির সদস্য। উনি পার্টির হোল টাইমার। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা রোডে তাঁর বাড়ি। বর্তমানে দিল্লীতে তাঁর কয়েক কোটি টাকার ফ্ল্যাট রয়েছে বলে অভিযোগ অখিলের। এদিন বারবার সুশান্তর বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন তিনি। “নিজের এলাকায় খোঁজ নিয়ে দেখুন পরীক্ষায় পাশ না করে চাকরি করছেন কতজন। কমরেডদের পরিবার দেখুন কতজন চাকরি করছে? কোন যোগ্যতায় বা তাঁরা চাকরি করছে? মেদিনীপুর জেলার তৎকালীন সম্পাদক দীপক সরকারের মদতেই উনি এই সব কাজ করেছেন যোগ্য প্রার্থীদের বঞ্চিত করে। আর এখন ধোয়া তুলসী পাতা ?”, প্রশ্ন কারামন্ত্রী অখিলের।
