এবার গ্রামবাংলার মানুষদের দিকে তাকিয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। রাজ্যের গ্রামীণ এলাকায় যে সাড়ে ১১ হাজার কিলোমিটার রাস্তা পথশ্রী ও রাস্তাশ্রী প্রকল্পের মাধ্যমে গড়ে তোলা হবে, সেখানেকার ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের জবকার্ড হোল্ডারদের কাজ দেওয়া হবে। রাজ্যে এমন জবকার্ড হোল্ডারদের সংখ্যা ১০ লক্ষ। অর্থাৎ রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে ১০ লক্ষ মানুষকে আয়ের মুখ দেখাতে চলেছে রাজ্য। যখন কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন নরেন্দ্র মোদীর সরকার সমস্ত কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা আটকে রেখে গ্রাম বাংলার মানুষকে প্রতিনিয়ত সমস্যায় ফেলছে, তখন মমতা সরকারের সেই মানুষদের মুখে ভাত তুলে দেওয়ার উদ্যোগকে বিশেষ বার্তাবাহী বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। প্রসঙ্গত, বিগত এক বছর ধরে বন্ধ ১০০ দিনের কাজের টাকা আটকে রেখেছে মোদী সরকার। মূলত গ্রাম বাংলার মানুষকে ভাতে মারার মাধ্যমেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূলকে জব্দ করতেই এহেন কৌশল। এই আবর্তে গ্রামীণ মানুষের জন্য কাজের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে রাজ্য সরকার যে পদক্ষেপ নিল, তার নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবি রাখে।
প্রসঙ্গত, ১০০ দিনের প্রকল্পের জবকার্ড হোল্ডারদের কাজ দিতে আগেই পথশ্রী ও রাস্তাশ্রী প্রকল্পের বরাত পাওয়া ঠিকাদারদের নির্দেশ দিয়েছিল বিভিন্ন জেলা পরিষদ। কিন্তু তারপরেও দেখা যাচ্ছিল সেই নিয়ম ঠিকমতন পালন হচ্ছে না। তাই এবার রাজ্যের শীর্ষ স্তরে থেকে নিয়ম জারি করে দেওয়া হল যে, পথশ্রী-রাস্তাশ্রী প্রকল্পে যত কাজ হবে সেখানে এই ১০ লক্ষ জবকার্ড হোল্ডারদের কাজ দেওয়া হবে। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ২৮শে মার্চ সিঙ্গুর থেকে সাড়ে ১১ হাজার কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক তৈরির কাজের শুভ সূচনা করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের ২২টি জেলায় তৈরি হবে কিংবা সংস্কার হবে এই সাড়ে ১১ হাজার কিমি রাস্তা। এখন মমতার সরকারের সিদ্ধান্তে আগামী দু’মাসে এই প্রকল্পের মাধ্যমে ব্যাপক কাজের সুযোগ তৈরি হবে গ্রাম বাংলাজুড়ে। রাস্তা তৈরি এবং মেরামতির জন্য অনেক অদক্ষ শ্রমিকের প্রয়োজন হয়। সেই শূন্যস্থানই পূরণ করা হবে রাজ্যের ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের ১০ লক্ষ জবকার্ড হোল্ডারদের মাধ্যমে। সেই অর্থে এই প্রকল্প ডবল বেনিফিট নিশ্চিত করবে। একদিকে গ্রামের রাস্তা তৈরি হবে, অন্যদিকে, কাজ পাবেন সেই গ্রামেরই জবকার্ডধারী অদক্ষ শ্রমিকরা। একদিকে কেন্দ্রের বঞ্চনার প্রতিবাদ, পাশাপশি বাংলার মানুষের স্বার্থ রক্ষা করতেই এই পদক্ষেপ নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। জবকার্ড হোল্ডারদের এই প্রকল্পে বেশি করে কাজে লাগানোর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। সেই অনুযায়ী ইচ্ছুক
জবকার্ড হোল্ডারদের নামের তালিকা তৈরির নির্দেশ বিডিওদের দিয়েছে রাজ্য সরকার।