মোদী সরকার ক্ষমতা আসার পর থেকে একাধিক বার বাংলার সংস্কৃতিকে অপমানের অভিযোগ উঠেছে গেরুয়াশিবিরের বিরুদ্ধে। রবীন্দ্রনাথের জন্মস্থান পাল্টে দেওয়া থেকে কলকাতা বন্দর থেকে নেতাজির নাম মুছে দেওয়া – এরকম একাধিক ইস্যুতে উঠেছে বিতর্কের ঝড়। এবার সেই অভিযোগ তালিকায় নয়া সংযোজন হল চৈত্রে নববর্ষ পালন। আজ, ২২শে মার্চ হিন্দুদের জন্য পবিত্র দিন মনে করে রাজ্য বিজেপি নববর্ষ পালন করবে। আজ শুক্ল পক্ষের প্রতিপদ তিথি। এই দিনের ঐতিহাসিক গুরুত্বের কথা ঘটা করে প্রচার করে গেরুয়া শিবির তথা সঙ্ঘ। এবার বাংলায় সে জিনিসের প্রচলন করল বঙ্গ বিজেপি। আজকের দিনটিকে পালন করছে বঙ্গের গেরুয়া নেতারা। উত্তর কলকাতায় শোভাযাত্রা ও গঙ্গা আরতি করবে বিজেপি। উল্লেখ্য, সঙ্ঘ বছরে মোট ছ’টি উৎসব পালন করে। তার মধ্যে অন্যতম হল আজকের দিনটি। সারা রাজ্যে আজ ‘বর্ষ প্রতিপদ’ উৎসব পালন করছে সঙ্ঘ।
সঙ্ঘ দাবি করেছে, ব্রহ্মপুরাণ অনুযায়ী এই তিথিতেই প্রজাপতি ব্রহ্মা জগৎ সৃষ্টি করেছিলেন। সে কারণে আজ নাকি পৃথিবীতে কালগণনার প্রথম দিন। আজকের দিন থেকেই কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ শেষে যুগাব্দ গণনা শুরু হয়েছিল। এবার শুরু হচ্ছে ৫১২৫ যুগাব্দ। আবার এই তিথিতেই নাকি উজ্জয়িনীর সম্রাট শকদের তাড়িয়ে ‘শকারি বিক্রমাদিত্য’ উপাধি গ্রহণ করেছিলেন। আজকের দিনেই বিক্রম সম্বত্ প্রবর্তিত হয়েছিল। এবার ২০৮০ বিক্রমাব্দের সূচনা হবে। আরও দাবি করা হচ্ছে, এই তিথিতেই যুধিষ্ঠিরের রাজ্যাভিষেক হয়েছিল। তবে সাফ কথায়, আজ থেকে শুরু হচ্ছে চৈত্র নবরাত্রি। কিন্তু বাংলায় সময় বাসন্তী পুজো হয়। বঙ্গ সংস্কৃতিতে নবরাত্রি নেই। বাঙালির প্রকৃত দুর্গাপুজো অর্থাৎ বাসন্তী পুজো চলে ষষ্ঠী থেকে দশমী তিথি মেনে। উল্লেখ্য, তিথিতে সঙ্ঘের প্রতিষ্ঠাতা কেশব বলীরাম হেডগেওয়ারের জন্ম হয়েছিল। তবে কি নববর্ষের বুলি আওড়ে আম জনতাকে দিয়ে সঙ্ঘ নায়কের জন্মদিন পালন করাচ্ছে বিজেপি? উঠেছে প্রশ্ন। নিন্দার ঝড় উঠেছে একাধিক মহলে।