ফের বিতর্কের কেন্দ্রে মোদী সরকারের রেলমন্ত্রক। একদা রেলমন্ত্রী থাকাকালীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চালু করা ‘ইজ্জত’ মান্থলি সিজন টিকিট বা ‘ইজ্জত পাস’ বন্ধ করার পথে হাঁটল রেল। প্রসঙ্গত, ইজ্জত মান্থলি সিজন টিকিট (এমএসটি) নিয়ে কয়েকদিন আগে তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ ডাঃ শান্তনু সেনকে একটি চিঠি লিখেছেন কেন্দ্রীয় রেল রাষ্ট্রমন্ত্রী রাওসাহেব পাটিল দানভে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর চিঠিতেই ইজ্জত পাস নিয়ে রেলমন্ত্রকের অবস্থান স্পষ্ট করা হয়েছে। শান্তনু সেনকে পাঠানো চিঠিতে কেন্দ্রীয় রেল রাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন যে, এই মুহূর্তে নতুনভাবে ইজ্জত চালু করা যুক্তিযুক্ত নয়। গত ৮ই ডিসেম্বর রাজ্যসভার জিরো আওয়ারে ইজ্জত মান্থলি সিজন টিকিট পরিষেবা চালু করার বিষয়টি তুলেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ শান্তনু সেন। প্রায় তিন মাস পর চিঠি পাঠিয়ে সেই প্রশ্নের জবাব দিয়েছে রেলমন্ত্রক। রেল রাষ্ট্রমন্ত্রী চিঠিতে জানান, ২০১৯-২০ আর্থিক বছরে ট্রেনের যাত্রী টিকিটে প্রায় ৫৯ হাজার ৮৩৭ কোটি টাকার ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে। এই ভর্তুকি সব ট্রেন যাত্রী পেয়েছেন। দেশজুড়ে করোনাভাইরাস অতিমারীর জেরে প্রবীণ নাগরিক-সহ অন্য যাত্রীদের ট্রেন যাত্রা বন্ধ করতে ২০২০ সালের ২০শে মার্চ থেকে টিকিটে কনসেশন বন্ধ করে দেয় রেলমন্ত্রক। যা নিয়ে উঠেছিল সমালোচনার ঝড়।
প্রসঙ্গত, শুধু শারীরিক প্রতিবন্ধী, ছাত্রছাত্রী, রোগীদের কয়েকটি ক্যাটেগরিতে শর্তসাপেক্ষে ভর্তুকি চালু রাখা হয়। কিন্তু দেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত ট্রেনের টিকিটে ছাড় আর চালু হয়নি। কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রীর চিঠিতে ইজ্জত মান্থলি বন্ধের উপরই সিলমোহর পড়ল। ২০০৯-১০ আর্থিক বছরের রেল বাজেট ঘোষণার সময় ইজ্জত মান্থলি চালু করেছিলেন তৎকালীন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই ঘোষণার প্রেক্ষিতে ২০০৯ সালের ১৬ই জুলাই সার্কুলার জারি করে রেলমন্ত্রক ওই বছরের ১লা আগস্ট থেকে তা কার্যকর করার কথা জানায়। অন্যদিকে প্রধানত মাসিক আয় দেড় হাজার টাকার মধ্যে এমন অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিক-কর্মচারীদের কথা ভেবেই শর্তসাপেক্ষে এই পরিষেবা চালু করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অধিকাংশ রেল প্রকল্পে বরাদ্দ দেওয়া বন্ধ করার অভিযোগ উঠেছে। প্রকল্প বন্ধও করে দেওয়া হয়েছে। মেট্রো রেলের উদ্বোধনে পর্যন্ত আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে। অথচ জমি জোগাড় করে রেলের হাতে তুলে দিয়েছিলেন তিনিই। এবার ইজ্জত মান্থলিও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যেই এ নিয়ে শুরু হয়েছে শোরগোল। নিন্দায় সরব হয়েছে একাধিক মহল।