শিল্পক্ষেত্রে ফের তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ নিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। শিল্প এবং রিয়েল এস্টেটের জন্য প্রায় ৮,০০০ একর অব্যবহৃত সরকারি এবং প্যারাস্ট্যাটাল জমি (সরকারি উদ্যোগ আছে এমন জমি) চিহ্নিত করেছে রাজ্য। বুধবার শিল্প প্রচার পরিষদের একটি সভায় এমনটাই জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্য সচিব এইচ কে দ্বিবেদী। জমির পার্সেলগুলি ফ্রিহোল্ড ভিত্তিতে দেওয়া হবে। সাধারণত এই জাতীয় সরকারি জমি লিজহোল্ডের মাধ্যমে দেওয়া হয়। তবে নয়া ফ্রিহোল্ড নীতি অনুযায়ী, অনুমতির জন্য ক্রেতাদের সরকারের কাছে আসতে হবে না। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিনের সভায় সভাপতিত্ব করেন। তিনি বলেন, এটি একটি ‘উইন-উইন’ ব্যবস্থা। জানান, “উদ্যোক্তারা এখন তাঁদের প্রকল্পের পরিকল্পনা করার ক্ষেত্রে আরও স্বাধীনতা পাবেন। সরকার কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য রাজস্ব আয়ে জোর দেবে।” ওয়েস্ট বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের অমৃতসর-কলকাতা ফ্রেট করিডোরের কাছাকাছি শিল্পের জন্য ২,৬০০ একর জমি একেবারে ‘রেডি’ রয়েছে বলে জানান মুখ্য সচিব। অন্যান্য জমির তালিকায় রয়েছে দুর্গাপুর প্রোজেক্টস লিমিটেডের কাছে পড়ে থাকা ৩৬০ একর, ঢাকেশ্বরী কটন মিলের ২০০ একর এবং পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর এবং হুগলির ডানকুনি জুড়ে ৫ থেকে ৫০ একরের কয়েকটি ছোট জমি।
এদিন ডব্লিউবিআইপিসি-র সভায়, মুখ্য সচিব এইচ কে দ্বিবেদী বলেন, সরকারি জমি লিজহোল্ড থেকে ফ্রিহোল্ডের মাধ্যমে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই নীতি মন্ত্রিসভাতেও অনুমোদন পেয়ে গিয়েছে। বিধানসভায় একটি বিল পাস হয়েছে। তিনি জানান, “আমরা এখন রাজ্যপালের অনুমোদনের জন্য অপেক্ষা করছি।” মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, শিল্প করিডোর বরাবর জমির পার্সেলে প্রচুর কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা রয়েছে। ‘কেন্দ্রীয় অনুমান অনুযায়ী এখানে প্রায় ৪১ লক্ষ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হতে পারে,’ জানান মুখ্যমন্ত্রী। দ্বিবেদী বলেন, দক্ষিণবঙ্গের তিনটি শিল্প করিডোর, রঘুনাথপুর-ডানকুনি-হলদিয়া-তাজপুর করিডোর (৪০০ কিলোমিটার), ডানকুনি-কল্যাণী করিডোর (৪০ কিলোমিটার) এবং ডানকুনি-খড়গপুর করিডোর (১৬০ কিলোমিটার) -এর উন্নয়ন করা হবে। মুখ্যমন্ত্রী শশী পাঞ্জা, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং বাবুল সুপ্রিয়কে এই অর্থনৈতিক উদ্যোগের সম্পর্কে জনগণকে অবহিত করার জন্য প্রচেষ্টা চালাতে বলেন। মুখ্যমন্ত্রী জমি প্রদানের নীতি নিয়েও সতর্ক করে দেন। তিনি বলেন, এক সঙ্গে ৪-৫ জন শিল্পপতি জমি নিন। কিন্তু বলপূর্বক জমি দখল করা চলবে না। পাশাপাশি, বাংলায় এমএসএমই সেক্টরের ব্যাপক সম্প্রসারণের কথা উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পর ৪৯টি
এমএসএমই ক্লাস্টার ছিল। সেখান থেকে বেড়ে এখন ৫২১টি হয়েছে। রাজ্যে বর্তমানে এমএসএমই সেক্টরে ১ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি ঋণ প্রদান করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন মমতা।