বাম-কংগ্রেস হাত মেলাতেই তৃণমূলের হাতছাড়া হয়েছে সাগরদিঘি। দলীয় তদন্তের রিপোর্টেই এমন তথ্য উঠে এসেছে৷ পাশাপাশি ফ্যাক্টর হয়েছে সংখ্যালঘু ভোটও। আর তাই পঞ্চায়েত ভোটে সাগরদিঘি মডেল রুখতে তৎপর রাজ্যের শাসক দল। যে কারণে দলে বাড়তে চলেছে সংখ্যালঘু নেতাদের গুরুত্ব। ভাঙড়ের দায়িত্বে শওকত মোল্লা এবং সাগরদিঘির দায়িত্বে এক ঝাঁক সংখ্যালঘু নেতাকে নিয়ে আসা হয়েছে। শুধু তাই নয়।পঞ্চায়েতে একাধিক সংখ্যালঘু মুখকে দায়িত্বে আনতে পারেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, আগামী শুক্রবার কালীঘাটে তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ বৈঠকে এই বিষয়ে আলোচনা হতে পারে। ইতিমধ্যেই সাগরদিঘি উপনির্বাচন হারের কারণ নিয়ে পর্যালোচনা করছে শাসক দল। বিভিন্ন সংখ্যালঘু এলাকায় গত কয়েক বছরে কী কী কাজ করা হয়েছে, কত সংখ্যক কাজ বাকি আছে, তার যাবতীয় তথ্য বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।
সম্প্রতি সাগরদিঘি বিধানসভা উপনির্বাচনে পরাজিত হয়েছে তৃণমূল। আর তারপরই সেই হারের কারণ খুঁজতে দলীয় স্তরে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব৷ প্রাথমিক একটি রিপোর্ট তৈরি হয়েছে বলে সূত্রের খবর। সেখানেই উঠে এসেছে একাধিক তথ্য। প্রাথমিক দলীয় রিপোর্টে উঠে এসেছে এই আসনে জয়লাভ করা কখনই সহজ ছিল না তৃণমূলের কাছে। ২০১১ সালে তৃণমূল পেয়েছিল এই আসনে ৩৮.০২ শতাংশ ভোট। বামেরা পেয়েছিল ৩৪.৮৫ শতাংড ভোট। কংগ্রেসের সঙ্গে জোট ছিল তৃণমূলের। যদিও এই আসনে টিকিট না পেয়ে নির্দল হিসাবে লড়াই করেছিলেন আমিনুল ইসলাম। কংগ্রেস দল তাঁকে সাসপেন্ড করে। সমর্থন করেন অধীর চৌধুরী। তিনি প্রায় ১৫.৫৭ শতাংশ ভোট পান। তৃণমূল জয় পায় ৪৫৭৪ ভোটে।
২০১৬ সালে বাম-কংগ্রেস জোট হলেও মুর্শিদাবাদে বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াই হয় তাদের। সেখানে তৃণমূল জেতে মাত্র ৫২১৪ ভোটে। তৃণমূল পায় ২৬.২১ শতাংশ ভোট। কংগ্রেস পায় ২৩.১৬ শতাংশ ভোট। বামেরা পায় ২৩.০৩ শতাংশ ভোট। নির্দল পায় ১৮.৬৭ শতাংশ ভোট। যদিও ২০২১ সালে গোটা রাজ্যেই লড়াই হয় তৃণমূল বনাম বিজেপির বিরুদ্ধে৷ সেখানে তৃণমূল পায় ৫১.০০ শতাংশ ভোট। বিজেপি পায় ২৪.০০ শতাংশ ভোট৷ কংগ্রেস পায় ১৯.০০ শতাংশ ভোট। তৃণমূল প্রায় ৫০২০৬ ভোটে জেতে। উপনির্বাচন আর সরকার গড়ার ভোট নয়। ফলে বাম ও কংগ্রেসের যে ভোট তৃণমূলে গিয়েছিল তা আবার ফেরত যায়। এমনকি ২০২১ এর তুলনায় ভোট কমে যায় বিজেপির৷ তাই তৃণমূলের চেয়ে প্রায় ১৩ শতাংশ ভোট বেশি পেয়েছে বাম-কংগ্রেস জোট।