খোদ কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যানই মুখ পোড়াল মোদী সরকারের! গালভরা প্রচার করে মহাসমারোহে স্বচ্ছ ভারত মিশন চালু করেছিল শাসকদল বিজেপি। ঠিক হয়েছিল, দেশের যে সব পরিবারের বাড়িতে শৌচাগার নেই, সেই সব পরিবারে শৌচাগার তৈরি করে দেবে কেন্দ্র। দেশের বেশির ভাগ রাজ্যেই এখন বিজেপির ‘ডবল ইঞ্জিন’ সরকার চলছে। বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলিতে তাই এই প্রকল্প রূপায়িত হোক বা না হোক, ডবল ইঞ্জিন রাজ্যগুলিতে তা দ্রুত গতিতে রূপায়িত হবে। কিন্তু এখন কেন্দ্রের পরিসংখ্যানই জানান দিচ্ছে যে, দেশে কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে নরেন্দ্র মোদীর স্বচ্ছ ভারত মিশন। পাশাপাশি, তুলনামূলকভাবে যথেষ্ট ভালো জায়গায় রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাংলা। মার্চ মাসে প্রকাশিত কেন্দ্রের সমীক্ষা রিপোর্টেই স্পষ্ট যে, বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলিতে এখনও লক্ষাধিক বাড়িতে শৌচাগারের ব্যবস্থা নেই। ফলে খোলা জায়গায় অথবা পড়শিদের দয়াদাক্ষিণ্যে শৌচাগারের সুবিধা পেতে হয় সেখানকার বহু মানুষকে। ২০২১ থেকে ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ২ লক্ষ ৭৬ হাজার ৪০৯টি বাড়ির অপর সমীক্ষাটি করা হয়। তার মধ্যে ১ লক্ষ ৬৪ হাজার ৫২৯টি বাড়ি দেশের গ্রামীণ এলাকার এবং বাকি ১ লক্ষ ১১ হাজার ৮৮০টি বাড়ি শহরাঞ্চলের।
উল্লেখ্য, বিজেপিশাসিত ডবল ইঞ্জিন রাজ্যগুলি যখন বাড়ি বাড়ি শৌচাগার নির্মাণের ক্ষেত্রে ধরাশায়ী, সেখানে যথেষ্ট ভালো জায়গায় রয়েছে বাংলা। বাড়ি বাড়ি শৌচাগার নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে বিজেপিশাসিত উত্তরপ্রদেশ, গুজরাত, কর্ণাটক এবং মধ্যপ্রদেশকে টেক্কা দিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। এমনকী, এই প্রশ্নে অই ৪টি রাজ্য জাতীয় গড়েরও নীচে রয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই গেরুয়া শিবিরের দিকে আঙুল তুলতে শুরু করেছে বিরোধী রাজ্য এবং দলগুলি। তাদের বক্তব্য, বিভিন্ন সময়ে নানা অজুহাতে বিরোধী রাজ্যগুলির টাকা আটকে দেয় কেন্দ্র। তার ঝক্কি ডাবল ইঞ্জিন রাজ্যগুলিকে কখনও পোহাতে হয় না। সোশ্যাল অডিট রিপোর্ট জমা ছাড়াই অনেক ক্ষেত্রে তারা কেন্দ্রীয় টাকা পাচ্ছে, রয়েছে তারও দৃষ্টান্ত। বাংলার পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার প্রশ্ন তুলেছেন এই প্রসঙ্গে যে, “অনেক বাড়তি সুবিধা পেয়েও কেন এই সমস্ত রাজ্যের প্রশাসন শৌচাগার নির্মাণের ক্ষেত্রে এতটা পিছিয়ে রয়েছে? আসলে ওরা মানুষের জন্য কাজ করে না, শুধু ভাঁওতা দিয়ে বেড়ায়।” প্রতিটি বাড়িতে শৌচাগার নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে বাংলার তুলনায় বেশ পিছিয়ে রয়েছে প্রতিবেশী বিহার, ঝাড়খণ্ড এবং উড়িষ্যাও। সমীক্ষা রিপোর্ট অনুযায়ী, গ্রাম ও শহর মিলিয়ে উড়িষ্যার ৩৩.৬ শতাংশ বাড়ির বাসিন্দারা শৌচাগারের সুবিধা থেকে বঞ্চিত। সংখ্যাটি ঝাড়খণ্ড এবং বিহারের ক্ষেত্রে যথাক্রমে ৩৩.৯ এবং ৩০.৭। সেখানে বাংলা অনেকটাই উজ্জ্বল।