রাজ্যে যে পরিমাণ ডিম উত্পাদিত হয়, তা দিয়ে প্রতিদিনের ডিমের চাহিদা মেটে না। তাই বছর দুয়েক আগে পানাগড়ে এক সরকারি কর্মসূচী থেকে আরও বেশি বেশি করে পোলট্রি করার পরামর্শ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলাতে ডিমের উৎপাদন বাড়িয়ে বাংলাকে ডিম উৎপাদনে স্বনির্ভর করে তোলাই ছিল তাঁর স্বপ্ন। মমতার সেই স্বপ্নই এবার পূরণ হতে চলেছে। সব কিছু ঠিক থাকলে চলতি বছরের ডিসেম্বরেই সেই সীমা ছুঁয়ে ফেলবে বাংলা।
২০১১-য় ক্ষমতায় আসার পরপরই ভিন রাজ্য থেকে ডিম আমদানি কমিয়ে আনার লক্ষ্যে পদক্ষেপ করে মমতা সরকার। মূল লক্ষ্য ছিল, রাজ্যবাসীর দৈনিক চাহিদা অনুযায়ী ডিমের জোগান নিশ্চিত করতে উপযুক্ত পরিকাঠামো গড়ে তোলা। দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করে নিরলস ভাবে সেই কাজ করে চলেছে রাজ্যের প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতর। তারই ফলশ্রুতিতে এ বছরের শেষে ডিম উৎপাদনে স্বনির্ভর হয়ে উঠতে চলেছে বাংলা। সরকারি সংস্থা ডব্লিউবিএলডিসি দৈনিক উৎপাদন এক লাফে ১০ গুণ বৃদ্ধি করতে চলেছে। ডিসেম্বরেই কল্যাণী, গোবিন্দপুর, শালবনি, মেখলিগঞ্জ, ইংরেজবাজার সহ সমস্ত সরকারি ফার্মে সব মিলিয়ে ২০ লক্ষের বেশি ডিম উৎপাদিত হবে।
শুধু তাই নয়, রাজ্য সরকার গত বছর ১ কোটির বেশি মুরগির বাচ্চা ব্যক্তিগত পালকদের মধ্যে বণ্টন করেছিল রাজ্য সরকার। গ্রামে গ্রামে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর পশুপালকদেরও মুরগির বাচ্চা দেওয়া হয়েছিল। এই মুরগি থেকে ডিমের উৎপাদন চলতি বছরের শেষে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছবে। তখন রাজ্যের মোট চাহিদার প্রায় ৫০ শতাংশ ডিম এই সরকারি ফার্ম এবং ব্যক্তিগত পালকদের মাধ্যমেই জোগান দেওয়া সম্ভব হবে। গত কয়েকবছরে রাজ্য সরকার বেসরকারি মুরগি পালকদের বিবিধ পরিকাঠামোগত সহায়তা করেছে। ১০ হাজারের বেশি মুরগি রাখার ক্ষমতা সম্পন্ন প্রায় ১০০টি ফার্মকে উৎপাদন বৃদ্ধির বৈজ্ঞানিক ও কারিগরি সুলুক-সন্ধান দেওয়া হয়েছে। ফলে ডিমের উৎপাদন বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। ডিসেম্বরের মধ্যে এই বেসরকারি ফার্মগুলির উৎপাদনও সর্বোচ্চ হতে চলেছে।