ফের প্রকাশ্যে এল ভারতীয় রেলের বেহাল পরিস্থিতি। এবার হাওড়া মেলে চেপে চেন্নাই থেকে বিশাখাপত্তনম যাওয়ার সময় অসহনীয় অভিজ্ঞতার শিকার হলেন যাত্রীরা। একটি ইংরেজি সংবাদমাধ্যমের ফটোগ্রাফার ও তাঁর স্ত্রী এই ট্রেনে ছিলেন। তিনি সেই অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। লোকে গিজগিজ করছে স্লিপার কোচ! শুধু সিটে নয়, মাঝের করিডরেও প্রবল ভিড়। এমনকী সিটে যাওয়ার জন্য তাদের রীতিমতো লোকজনের উপর দিয়ে লাগেজ নিয়ে যেতে হয়েছে। পরদিন সকালে টিটি আসেন। আসলে স্লিপারের টিকিট নেই, এমন লোকজন কামরায় উঠে পড়েছিলেন। হোলি উপলক্ষ্যে সকলেই বাড়ি ফিরতে চাইছিলেন। সেকারণেই স্লিপারের কামরাতেও ভিড় জমে যায়। উক্ত ফটোগ্রাফার জানিয়েছেন, ট্রেন ছাড়ার এক ঘণ্টা আগে চেন্নাই সেন্ট্রালে এসেছিলেন তাঁরা। এরপর হাওড়া মেলে চেপে বিশাখাপত্তনম যাওয়ার কথা ছিল। তিনি জানিয়েছেন, কোচটি ছিল এস৩।
পাশাপাশি, তাঁর বক্তব্য, “নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। মানুষ ফুটবোর্ডে ঝুলছে। কোনও রেলওয়ে স্টাফ কাউকে চোখে পড়েনি। যে যেমন পেরেছে, স্লিপারের কামরা দখল করে নিয়েছিলেন। আমি বুঝতে পারছিলাম না, যাব নাকি ফিরে যাব। একেবারে গিজগিজ করছিল সংরক্ষিত কামরা। এদিকে কামরার ভেতরে যাওয়ার জন্য কয়েকজনকে ফুটবোর্ড থেকে নামাতে হয়। ১৭, ১৮, ১৯ নম্বর বার্থ ছিল আমাদের। সেখানে যাওয়ার জন্য অন্যের শরীরের উপর দিয়ে লাগেজ নিয়ে যেতে হয়। অন্তত পাঁচজন আমার লোয়ার বার্থে বসেছিলেন। কোনওরকমে তাদের সরাতে হয়। মেয়ে আর স্ত্রীকে নিয়ে সেই ভয়াবহ জার্নি কোনওদিন ভুলবনা।হআটজনের কুপে অন্তত ৩০ জন উঠে পড়েছিল। প্রায় সকলকে জিজ্ঞাসা করি। কিন্তু তারা জানান তাদের কাছে স্লিপার ক্লাসের কোনও টিকিট নেই। ট্রেনের টয়লেটে যাওয়ার জন্য অন্তত ১০ মিনিট সময়ে লেগেছে। এদিকে সেখানে গিয়ে আবার অন্য অভিজ্ঞতা। সেই টয়লেটের মধ্যেও তিনজন ঢুকে রয়েছেন। তবে অন্য একটি টয়লেট খালি ছিল। বাড়ি থেকে ডিনার প্যাক করে নিয়ে এসেছিলাম। কিন্তু খেতে পারিনি। চারদিক থেকে লোকজন কেমন যেন তাকিয়ে ছিলেন। সারারাত ঘুমোতে পারিনি।” ঘটনার পর স্বাভাবিকভাবেই প্রবল সমালোচনার মুখে মোদী সরকার। উৎসবের আগে স্পেশাল ট্রেনের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয় না কেন? কেন এভাবে সংরক্ষিত কামরায় উঠে পড়েন এত যাত্রী? উঠছে প্রশ্ন। বইছে বিতর্কের ঝড়।
![সংরক্ষিত স্লিপার কামরায় গিজগিজ করছে ভিড়, টয়লেটেও লোকজন! - প্রকাশ্যে ভারতীয় রেলের বেহাল দশা](https://ekhonkhobor.com/wp-content/uploads/2023/03/WhatsApp-Image-2023-03-10-at-5.53.41-PM-1.jpeg)