এবার তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সুরে সুর মেলালেন তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের কন্যা তথা ভারত রাষ্ট্র সমিতির নেত্রী কবিতা রাও। প্রায়শই কংগ্রেসকে ইদানীং প্রায়ই বিজেপির বি-টিম বলে কটাক্ষ করেন মমতা। সাগরদিঘিতে উপনির্বাচনে হারের পর সেই সুরকে আরও চড়া দাগে তুলেছেন দিদি। তৃণমূল নেত্রী চব্বিশের ভোটের আগে বিজেপিকে ঠেকাতে আঞ্চলিক শক্তিকে জোট বাঁধার বার্তা দিচ্ছেন। এবার সেই একই সুর শোনা গেল কবিতার কথায়। একটি সাক্ষাৎকারে কবিতা বলেন, “কংগ্রেসের এখন আছেটা কী? লোকসভায় গোটা ৫০ সাংসদ, সব মিলিয়ে সারা দেশে সাড়ে ছ’শোর মতো বিধায়ক, বাংলায় তো সবে খাতা খুলল। এই কংগ্রেসকে আগ্রাসী মনোভাব ছাড়তে হবে।” গত একুশে জুলাইয়ের বক্তৃতায় চব্বিশের সমীকরণের কথা বলেছিলেন মমতা। আঞ্চলিক শক্তির সমীকরণ উল্লেখ করে তিনি বাংলা, তামিলনাড়ু ইত্যাদি রাজ্যের কথা বলেছিলেন। কবিতাও একই কথা বলেছেন। কেসিআর-কন্যার বক্তব্য, “২০০-র বেশি আসনে বিজেপির বিরুদ্ধে কংগ্রেসের মুখোমুখি লড়াইয়ের যে কথা বলা হয় তা আসলে মিথ। আসল ব্যাপার হল ক’টা আসন কংগ্রেস জিতছে!”
পাশাপাশি কবিতা এ-ও বলেন, “বিজেপি ধাক্কা খাচ্ছে কোথায়? বিজেপি ধাক্কা খেয়েছে তেলেঙ্গানায়, আমরা সেটা করেছি। তামিলাড়ুতে স্ট্যালিন করেছেন, বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করেছেন। আর কংগ্রেস? ওদের এই বাস্তবতাটা বুঝতে হবে।” তেলেঙ্গানার দলটিকে জাতীয় স্তরে তুলে উৎসুক নেত্রী জানান, “দেশের বাস্তবতা কংগ্রেসকে বুঝতে হবে। ছাড়তে হবে বিগ ব্রাদার অ্যাটিটিউড।” তাঁর কথায়, “জাতীয় স্তরে বিজেপির বিরুদ্ধে কংগ্রেস এখন বিকল্প নয়। বরং রাজ্যে রাজ্যে বিজেপি বিরোধী শক্তি হিসাবে মানুষ কেসিআর, মমতা, স্ট্যালিনদেরই হাত শক্ত করছে।” কবিতাকে প্রশ্ন করা হয়, এটা কি কংগ্রেসের উপর আঞ্চলিক দলগুলির একধরনের চাপ তৈরি? এভাবেই কি কংগ্রেসকে বাগে আনার কৌশল নেওয়া হচ্ছে? জবাবে কবিতা রাও বলেন, “এটা কোনও চাপ নয়। বাস্তবতা। সেই রূঢ় বাস্তবটা কংগ্রেসকে বুঝতে হবে এবং তাদের সমন্বয় করতে হবে অন্য দলগুলির সঙ্গে।” সেইসঙ্গে শুধুমাত্র ভোটকেন্দ্রিক রাজনীতির বাইরে হাঁটারও রাজনৈতিক ধারণার কথা শোনা গিয়েছে কবিতার বক্তব্যে। “ভোটের চিন্তা বন্ধ করে পরবর্তী প্রজন্মের কথা ভাবতে হবে, এটাই এখন একমাত্র মন্ত্র হওয়া উচিত। নির্বাচন আসবে যাবে। কেউ প্রধানমন্ত্রী হবেন, কেউ হবেন না। এটা ভিন্ন প্রশ্ন। আসল কথা হল, দেশটার ভবিষ্যৎ কী হবে”, জানিয়েছেন তিনি।