এবার ফের মুখ পুড়ল বঙ্গ বিজেপি নেতানেত্রীদের। তারা বারবারই এই অভিযোগ তুলেছিল, বাংলায় আবাস যোজনার টাকা নিয়ে দুর্নীতি হয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের সচিব চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিলেন, আবাসে কাটমানি বা ঘুষ নেওয়ার কোনও অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। এই প্রকল্পে যতগুলি বাড়ি অনুমোদন বা বাতিল হয়েছে, সবই হয়েছে নিয়ম মেনে। পঞ্চায়েত ভোটের আগে কেন্দ্রের এই চিঠি স্বাভাবিকভাবেই ‘ট্রাম্পকার্ড’ হয়ে উঠেছে নবান্নের কাছে।
জানা গিয়েছে, ১০ মার্চ কেন্দ্রকে পালটা চিঠি দিয়ে আবাসের বকেয়া টাকা চাওয়ার পাশাপাশি এই মিথ্যে অভিযোগকারী নেতানেত্রীদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া উচিত, তার পরামর্শ চাইবে নবান্ন। রাজ্যের গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার জানিয়েছেন, ‘ওই চিঠির প্রেক্ষিতে যা বলার বিধানসভায় বলব।’ প্রদীপবাবুর সরস রসিকতা, ‘কেন্দ্রের পাঠানো চিঠিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ, এমনকী এফআইআর করারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় দল যখন কোনও দুর্নীতির হদিশই পেল না, তাহলে কি ধরে নেব মিথ্যে অভিযোগকারীদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছে কেন্দ্র?’
আসলে আবাস যোজনা, সড়ক যোজনা, ১০০ দিনের কাজ-সহ কেন্দ্র-রাজ্য যৌথ উদ্যোগে চলা একাধিক প্রকল্পের টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্র। আটকে রাখার কারণ হিসেবে সেই দুর্নীতিকেই চাঁদমারি করা হয়েছে। অথচ দুর্নীতির তদন্ত করতে এসে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক দল ছোটখাটো দু, একটি ত্রুটি ছাড়া কিছুই খুঁজে পাচ্ছে না। কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক দলের এই রিপোর্ট দেখার পর ২৭ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্র চিঠি পাঠায় মুখ্যসচিব এইচ কে দ্বিবেদীকে। তাতেই উল্লেখ করা হয়েছে, আবাস যোজনায় ছোটখাটো বেনিয়ম ছাড়া কোনও দুর্নীতি হয়নি।
পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদারের পর্যবেক্ষণ, কেন্দ্রীয় দল ৭ টি জেলা পরিদর্শন করেছে। আবাস যোজনায় নাম অন্তর্ভুক্ত করতে কেউ ঘুষ বা কাটমানি নিয়েছে কি না, ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বহু মানুষকে এই প্রশ্ন করেছেন তদন্তকারীরা। কিন্তু কোথাও কোনও অনিয়ম বা দুর্নীতির হদিশ পায়নি। পূর্ব মেদিনীপুর, মালদহের কালিয়াচকে বেশ কয়েকটি বাড়ির অনুমোদন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। তদন্তকারীরা স্বীকার করে নিয়েছেন, কালিয়াচকের ১৩টি বাড়ির মধ্যে ১১টি রাজ্যই বাতিল করে দিয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরে অভিযোগ ওঠা বাড়িগুলির দেওয়ালে ঠিক জায়গাতেই ‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা’র স্টিকার লাগানো আছে।