এবার নিজের মন্ত্রিসভায় গুরুত্বপূর্ণ রদবদল করলেন দিল্লীর মুখ্যমন্ত্রী তথা আপ সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরিওয়াল। এবিষয়ে স্পষ্ট হয়ে পাওয়া গিয়েছিল মঙ্গলবারই। জেলবন্দী দুই মন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়া এবং এদিন সত্যেন্দ্র জৈনের পরিবর্তে এবার সৌরভ ভরদ্বাজ এবং আতিশীর নাম প্রস্তাব করে উপরাজ্যপাল বিনোদ কুমার সাক্সেনার কাছে পাঠালেন দিল্লীর মুখ্যমন্ত্রী। আবগারি নীতি প্রণয়নে দুর্নীতির অভিযোগে তদন্তে সিবিআই হেফাজতে দিল্লীর উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়া। বেআইনিভাবে টাকা লেনদেনের অভিযোগে আগেই জেল হেফাজতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈন। দুই সিনিয়র মন্ত্রীর অবর্তমানে দিল্লীর প্রশাসন চালাতে তাই নতুন মন্ত্রী হিসাবে কাউকে দায়িত্ব দেওয়া ছাড়া উপায় ছিল না কেজরিওয়ালের কাছে। তার উপর দু’-তিন সপ্তাহের মধ্যেই পেশ করতে হবে বাজেট। এই পরিস্থিতিতে কারা নতুন দায়িত্ব পান, সেদিকেই ছিল নজর। ৭০ আসনের বিধানসভায় আম আদমি পার্টির প্রতিনিধি ৬২ জন। এই বিপুল সংখ্যক বিধায়কের মধ্যে কাদের নির্বাচন করা হবে, সেই প্রক্রিয়া খুব একটা সহজ ছিল না। শেষ পর্যন্ত নিজের কাছের, বিশ্বস্ত দুই তরুণ তুর্কীকেই বেছে নিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ২০১৩ সালের একেবারে শেষ দিকে বিধানসভার ক্ষমতায় আসার সময় কেজরিওয়ালের প্রথম মন্ত্রিসভায় পরিবহন দফতরের দায়িত্বে ছিলেন সৌরভ। যদিও সেই সময় মাত্র ৪৯ দিনের মাথায় সরকার পড়ে যায়। এরপর থেকে দলের প্রধান মুখপাত্রের দায়িত্বে ছিলেন সৌরভ। সম্প্রতি পাঞ্জাব রাজ্যসভার সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার পর রাঘব চাড্ডার বদলে দিল্লী জল বোর্ডের দায়িত্ব পালন করেছেন গ্রেটার কৈলাশ কেন্দ্রের বিধায়ক।
পাশাপাশি, এবারই প্রথমবার বিধানসভায় এসেছেন আতিশী। আট বছর বাদে তিনিই হতে চলেছেন কেজরিওয়াল মন্ত্রিসভার প্রথম মহিলা সদস্য। দীর্ঘদিন ধরেই নানা আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত আতিশী ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন মণীশ সিসোদিয়ার শিক্ষা বিপ্লবের সঙ্গে। এখনও পর্যন্ত যা খবর, তাতে শিক্ষা দফতরের দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে তাঁকেই। সঙ্গে পেতে পারেন শ্রম ও পর্যটন দফতরের দায়িত্ব। সৌরভকে দেওয়া হতে পারে পূর্ত এবং বিদ্যুৎ দফতর। কোনও মহলের ধারণা, আপাতত বাজেট পেশ করবেন পরিবহনমন্ত্রী কৈলাশ গেহলট। পরবর্তীতে অর্থ বা স্বরাষ্ট্র দফতরের দায়িত্বও দেওয়া হতে পারে সৌরভকে। কৈলাশ ও রাজ কুমার আনন্দকে দেওয়া হবে সিসোদিয়ার অধীনে থাকা দফতরগুলির অতিরিক্ত দায়িত্ব। এদিকে, মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়ালের পদত্যাগের দাবিতে একদিকে যখন বিজেপি ও কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকরা পৃথক পৃথকভাবে পথে নেমেছেন, সেই সময় সিসোদিয়ার গ্রেফতারে কেন্দ্রের শাসক দল ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ অব্যাহত রেখেছেন তিনি। বুধবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে কেজরি বলেন, “সিসোদিয়া যদি বিজেপিতে যোগ দিতেন তবে তাঁকে গ্রেফতার করা হত না। বিজেপির একমাত্র অ্যাজেন্ডা হল আপকে আটকানো।” মনীশ সিসোদিয়া এবং সত্যেন্দ্র জৈনের বিরুদ্ধে নথিভুক্ত মিথ্যা মামলা সম্পর্কে মানুষকে অবহিত করতে ৫ই মার্চ থেকে ঘরে-ঘরে প্রচারে যাওয়ার কর্মসূচী নিয়েছেন আপ কর্মীরা, সূত্র অনুযায়ী জানা গিয়েছে এমনটাই।
