ধনকর-পর্ব এখন অতীত। গত ২৬শে জানুয়ারি বাংলার নতুন রাজ্যপাল হিসেবে অভিষেক হয়েছিল সিভি আনন্দ বোসের। এরপর বারবার প্রকাশ্যে এসেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি তাঁর শ্রদ্ধার নিদর্শন। সরস্বতী পুজোয় রাজভবনে ‘হাতেখড়ি’ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন তিনি। আর আজ রাজভবনে যা ঘটল, তা নবান্নের সঙ্গে রাজ্যপালের সমন্বয়ের অন্যতম দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। শান্তিপূর্ণ পথে রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্য নিয়োগ বিতর্কের সমস্যার সুরাহা হল। এবং তা ঘটল একেবারে নিঃশব্দে, কোনও বিড়ম্বনা ছাড়াই। সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল যে, বাংলার ২৪ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ প্রক্রিয়া বৈধ নয়। এদিন সাত জন উপাচার্য রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠক করেন। তারপর সাংবাদিক সম্মেলন করে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানালেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরামর্শে এবং রাজ্যপালের নির্দেশনায় কীভাবে সমাধান হল এই সমস্যার।
মঙ্গলবার রাজভবনের বৈঠকে সমস্ত উপাচার্য পদত্যাগ করেন। তারপর তাঁদের তিন মাসের জন্য উপাচার্য পদে মেয়াদ বৃদ্ধি করেছেন রাজ্যপাল তথা বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য সিভি আনন্দ বোস। সোমবার শিক্ষামন্ত্রী ও রাজ্যপালের দু’ঘণ্টার বৈঠক হয়। তারপর কলকাতা ও আশাপাশের জেলার বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্যদের ডাকা হয়েছিল রাজভবনে। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য জানিয়েছেন, আগামীকাল বাকি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা এসে রাজ্যপালের হাতে তাঁদের পদত্যাগপত্র তুলে দেবেন। এবং তাঁদেরও তিন বা চার মাস করে মেয়াদ বাড়ানো হবে। পাশাপাশি ব্রাত্য জানান, রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠকে ঠিক হয়েছে যে এই সময়ের মধ্যে সমান্তরালভাবে আর একটি কাজ চলবে। তা হল নতুন উপাচার্য নিয়োগের বিষয়ে সার্চ কমিটি গঠন। সেই গঠন প্রক্রিয়া কী হবে সে ব্যাপারেও রাজ্যপাল তাঁর আইনি পরামর্শ দিয়েছেন। সেইসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন তথা ইউজিসি গাইডলাইন মেনেই সার্চ কমিটি গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন সিভি আনন্দ বোস।হএদিন রাজ্যপাল এবং শিক্ষামন্ত্রী বারবার বলেন যে, নবান্ন ও রাজভবন চলবে সমন্বয়ের ভিত্তিতেই। অতীতের আর পুনরাবৃত্তি হবে না। “আমি মনে করি শিক্ষাক্ষেত্রে সংঘাত থাকা উচিত নয়। কারণ তা আমাদের নতুন প্রজন্মের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে”, বক্তব্য সিভি আনন্দ বোসের।
