ফের দেশের শীর্ষ আদালতের প্রশ্নের মুখে পড়ল মোদী সরকার। ভারতজুড়ে জমাদার, মেথর বা ধাঙড়ের কাজের বোঝা লাঘব করতে বহু দিন আগেই আইন বলবৎ হয়েছিল। তাঁদের কাজ মেশিনের কাঁধে দিয়ে এই পেশার সঙ্গে যুক্তদের অন্য কাজ দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল ২০১৩ সালের এই আইনে। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট মোদী সরকারের কাছে জানতে চাইল, সেই আইন প্রয়োগের ব্যাপারে কত দূর এগিয়েছে কেন্দ্র? গত ১০ বছরে মেথরদের ময়লা পরিষ্কারের কাজের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে নতুন কাজ দেওয়ার ব্যাপারে কী কী পদক্ষেপ করেছে কেন্দ্র? এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে রাজ্যভিত্তিক রিপোর্ট চেয়েছে দেশের শীর্ষ আদালত। আগামী ছ’সপ্তাহের মধ্যেই জমা দিতে হবে সেই রিপোর্ট।
প্রসঙ্গত, বিগত ১৯৯৩ সালেই কার্যকর হয়েছিল এ সংক্রান্ত আইন। তাতে স্পষ্ট করে বলা হয়েছিল বর্জ্য পরিষ্কারের জন্য আর মানুষের শ্রম ব্যবহার করা যাবে না। এমনকী, ম্যানহোল পরিষ্কার করা বা বিনা জলের শৌচাগার (খাটা পায়খানা) পরিষ্কারের যে কাজ আগে মেথর বা ধাঙড়দের করতে হত, তা-ও বন্ধ করতে হবে। তবে তারও আগে বন্ধ করতে হবে খাটা পায়খানা জাতীয় শৌচাগারের ব্যবহার। ১৯৯৩ সালের ওই আইনের ২০ বছর পর ২০১৩ সালে এই পেশায় যুক্ত পুরনো পেশাদারদের পুনর্বাসন দেওয়ার আইনও প্রণয়ন করা হয়। এই দু’টি আইন বলবৎ করার কাজে কতটা এগিয়েছে কেন্দ্র? মঙ্গলবার এমনই জানতে চেয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে এই আইন বলবৎ হওয়ার পর ২০১৪ সাল থেকেই কেন্দ্রে ক্ষমতায় এসেছে মোদী সরকার। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এস আর ভট্ট এবং বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, আগামী ছ’সপ্তাহের মধ্যে সরকার আদালতকে জানাবে, বিনা জলের শৌচাগারের ব্যবহার কতটা কমাতে পেরেছে প্রশাসন। প্রতি রাজ্যে এখনও কত এমন শৌচাগার রয়েছে। রাজ্যভিত্তিক মেথরদের সংখ্যা এবং কত জনকে পুনর্বাসন দেওয়া হয়েছে, তারও হিসাব চেয়েছে কোর্ট। একই সঙ্গে আদালত জানতে চেয়েছে, ময়লা পরিষ্কারের বিকল্প পথ হিসাবে কী কী ব্যবহার করা হচ্ছে, মেশিন ব্যবহার করে পরিষ্কার করা হচ্ছে কি না, ম্যানহোল বা ময়লার কূপে পড়ে কত জনের মৃত্যু হয়েছে, কেন্দ্রের কাছে এসবের হিসেব চাইল শীর্ষ আদালত।