দুয়ারে পঞ্চায়েত নির্বাচন। আর বঙ্গ–বিজেপিতে শুরু হয়েছে তুমুল ডামাডোল। কারণ দলের জেলা সভাপতিদের ডানা ছাঁটার কাজ শুরু করেছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। তাঁরা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এখন থেকে দলের জেলা এবং মণ্ডল পর্যায়ে সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবেন ‘ইনচার্জ’রা। আবার কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশে রাজ্য বিজেপিকে সব তথ্যই ‘সরল’ অ্যাপে দিতে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। কারণ ভুয়ো রিপোর্ট নিয়ে বেজায় চটে আছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। এই অ্যাপের জেরে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব রাজ্য থেকে বুথ স্তরের সংগঠনের হাল হকিকত এক ক্লিকে জেনে নিতে পারবেন।
সূত্রের খবর, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব মনে করছে, দলের জেলা সভাপতিদের সঙ্গে রাজ্য নেতৃত্বের একাংশের ‘অশুভ আঁতাত’ তৈরি হয়েছে। এই মৌরসি পাট্টা ভাঙতে উদ্যোগী হয়েছে নয়াদিল্লি। ‘ইনচার্জ’দের জেলা, বিধানসভা এবং মণ্ডল পর্যায়ে সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার দিয়ে আদতে জেলা সভাপতিদের ক্ষমতাই ছেঁটে ফেলা হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। তাই দলের অন্দরে চরম ডামাডোল শুরু হয়েছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে বিজেপির এই কাঠামোগত বদল অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। তবে অ্যাপটির ছোট নাম— সরল। আসলে আকাররে বড়। পুরো নাম— সংগঠন রিপোর্টিং অ্যান্ড অ্যানালিসিস। গোটা দেশের যাবতীয় সাংগঠনিক তথ্য একত্রে পেতেই এই অ্যাপ তৈরি করা হয়েছে।
এদিকে গত ২১ ফেব্রুয়ারি ভাষা দিবসের দিন দলের এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আসা হয়। রাজ্য সভাপতি ও সংগঠন সম্পাদকের উপস্থিতিতে এই নিয়ে রীতিমতো অসন্তোষ প্রকাশ করেন কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক সুনীল বনসল। তিনি জানিয়ে দেন, এখন থেকে পার্টিতে জোন ইনচার্জরা সাংগঠনিক জেলার যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেবেন। বিধানসভা এবং মণ্ডল স্তরে সংগঠন দেখভালের দায়িত্বে থাকবেন বিভাগ ইনচার্জরা। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক জেলা সভাপতি বলেন, ‘রাজ্য অফিস থেকে আমাদের বলা হতো, ইনচার্জদের বেশি গুরুত্ব দিতে হবে না। তাই জেলার রিপোর্ট আমরা সরাসরি রাজ্যে পাঠাতাম। দিল্লির নির্দেশের পর সবটাই হবে ‘থ্রু প্রপার চ্যানেল’।’ অন্যদিকে সব কর্মীকে অ্যাপ ‘ডাউনলোড’ করতে বলা হয়েছে। ফলে কোন বুথে কতজন অ্যাপ ব্যবহার করছেন তা দেখেই মুহূর্তের মধ্যে বোঝা যাবে বুথস্তরে দলের শক্তি ঠিক কেমন।