কড়া পদক্ষেপের পথে হাঁটল কলকাতা পুরসভা। শহরের রাস্তায় নোংরা জঞ্জালের দৃশ্য দেখে ক্ষুব্ধ মেয়র পারিষদ (কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা) দেবব্রত মজুমদার। শনিবার পুরসভায় মাসিক অধিবেশনে তিনি জানিয়েছেন, পুর আইনের ৩৩৮ নম্বর ধারায় বলা রয়েছে, ৫০ টাকা থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা নেওয়ার কথা। প্রয়োজনে বিষয়টা কোর্টকে জানানো যায়। জঞ্জাল ফেলা আটকাতে কাউন্সিলরদের আরও সচেতন হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। গত সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে রাস্তায় জঞ্জাল ফেলার অপরাধে ১২৮৬ জনের কাছ থেকে জরিমানা আদায় করা হয়েছে। পুরসভা সূত্রে খবর, কত বড় অপরাধ হচ্ছে, তার উপরেই নির্ভর করবে জরিমানার অঙ্ক। একাধিকবার বারণ করার পরেও যদি কেউ রাস্তায় আবর্জনা ফেলেন, সেক্ষেত্রে তাঁকে মোটা অঙ্কের জরিমানা গুনতে হবে।
পাশাপাশি, এদিন কাউন্সিলর বিশ্বরূপ দে প্রশ্ন তোলেন, কত শতাংশ বাড়িতে সবুজ, নীল ডাস্টবিন দিয়েছে পুরসভা? উল্লেখ্য, যে সমস্ত পুরসভায় এক লক্ষ বা তার বেশি জনসংখ্যা রয়েছে, সেই সমস্ত পুরসভায় কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে বিশেষ পরিকল্পনা নিয়েছিল পুর দফতর। সেইমতো কলকাতা পুর এলাকার বাসিন্দাদের পচনশীল এবং অপচনশীল বর্জ্য পদার্থ রাখার জন্য দুটি পৃথক ডাস্টবিন দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। অপচনশীল বর্জ্য পদার্থ (কাগজ, রাংতা) জন্য নীল এবং পচনশীল (সবজির খোসা, এঁটো) বর্জ্য পদার্থের জন্য সবুজ বালতি বিলি করা শুরু হয়েছিল। কিন্তু বছর ঘুরতে দেখা যাচ্ছে, অগুনতি বাড়িতে এখনও পৌঁছয়নি সে বালতি। কলকাতা পুর এলাকার ষোলোটি বরোর কোথায় কত বালতি পৌঁছেছে, সামনে এসেছে সে হিসেব। মেয়র পারিষদ দেবব্রত মজুমদার জানিয়েছেন, পুরসভার ২৭টি ওয়ার্ডে ১০০ শতাংশ ডাস্টবিন দেওয়া হয়েছিল আগেই। বাকি ১২৭টি ওয়ার্ডে সব জায়গায় ডাস্টবিন পৌঁছয়নি। এদের মধ্যে —
• বরো ১-এ ৫০.২৭ %
• বরো ২-তে ৩৪.৭৬%
• বরো ৩-এ ২৬.৮০%
• বরো ৪-এ ২৭.৯১%
• বরো ৫-এ ৫৬.৬৩%
• বরো ৬-এ ৩৬.৯১%
• বরো ৭-এ ৩২.৬৯%
• বরো ৮-এ ২১.৭৬%
• বরো ৯-এ ৪৮.৩৯%
• বরো ১০-এ ৭.৮৫%
• বরো ১১-তে ৬০.৭৯%
• বরো ১২-তে ৩৯.৬৭ %
• বরো ১৩-তে ৫৪.২৩%
• বরো ১৪-তে ৩৫.৩৭%
• বরো ১৫-তে ৩৬.৭৫%
• বরো ষোলোতে ৫৮.৪০% ডাস্টবিন দেওয়া গিয়েছে।
অর্থাৎ, সার্বিকভাবে কলকাতার মাত্র ৪০.৫০ শতাংশ বাড়িতে দেওয়া গিয়েছে নীল-সবুজ ডাস্টবিন। মেয়র পারিষদ দেবব্রত মজুমদার জানিয়েছেন, ”কয়েকটি বরোতে ভাল কাজ হয়েছে। কিন্তু অনেক জায়গাতেই কাজ আশাপ্রদ হচ্ছে না। কাউন্সিলরদের বলব এলাকায় বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে সচেতন করুন সাধারণ মানুষকে। অনেকে বালতি নিয়েও একসঙ্গে জঞ্জাল মিশিয়ে দিচ্ছেন। মিশ্রিত জঞ্জাল সংগ্রহ করবেন না।” পুরসভা সূত্রে খবর, গত জানুয়ারি মাসে শহরের বাড়িগুলি থেকে ২৩০ মেট্রিক টন এবং ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ২১০ মেট্রিক টন জঞ্জাল সংগ্রহ করা হয়েছে।