এবার দূষণ নিয়ন্ত্রণে তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ নিল কলকাতা পুরসভা। যেখানে-সেখানে বাতিল বৈদ্যুতিন জঞ্জাল ফেলার কারণে ক্রমশ দূষিত হচ্ছে শহর। এতদিন এই ধরনের জঞ্জাল ফেলার কোনও নির্দিষ্ট ঠিকানা ছিল না। ফলত সমস্যা বাড়ছিল। কলকাতা পুরসভায় এ নিয়ে একাধিক অভিযোগ জমা পড়ছিল। সেই সংক্রান্ত অভিযোগ পেয়ে এবার সমস্যার সুরাহায় নামতে চলেছে পুরসভা। মহানাগরিক ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, “এবার ই ওয়েস্ট ড্রপ বক্স বসানো হবে। সেই ড্রপ বক্সে বাতিল হওয়া বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম ফেলা যাবে। যার ফলে এই সংক্রান্ত সরঞ্জাম থেকে দূষণ কম ছড়াবে।” সাধারণত ভাঙা মোবাইল, ল্যাপটপ, কম্পিউটার, ফ্রিজ, ওয়াশিং মেশিন টিভি-সহ বিভিন্ন বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম অনেকেই ফেলে দেন। সেই সমস্ত সরঞ্জাম ফেলার জন্যই এই ধরনের বক্স বসানো হবে। প্রাথমিকভাবে কলকাতা পুরসভার তিনটি বোরোতে পরীক্ষামূলকভাবে ড্রপ বক্স বসানো হয়েছে। সেই পরীক্ষা সফল হওয়ায় এবার কলকাতা জুড়ে এই ধরনের ড্রপ বক্স বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রসঙ্গত, কলকাতা পুরসভায় প্রথম ড্রপ বক্স বসানো হয়েছে ১, ৯ এবং ১৬ নম্বর বোরোতে। বাকি বোরোগুলিতে ড্রপ বক্স বসানোর কাজ দ্রুত শুরু হবে, সূত্র অনুযায়ী জানা গিয়েছে এমনটাই।
এপ্রসঙ্গে পরিবেশ কর্মীরা জানিয়েছেন, বর্জ্য যত্রতত্র ফেললে সে ক্ষেত্রে দূষণের মাত্রা বাড়ে। এর ফলে পরিবেশের ক্ষতি হতে পারে। সেই কারণেই কলকাতা পুরসভা এই উদ্যোগ নিয়েছে। একবার এই পদ্ধতি চালু হয়ে গেলে বাড়ির কাছেই এই ড্রপ বক্স থাকবে। সেখানে ফেলা যাবে বাতিল হওয়া বৈদ্যুতিন সরঞ্জামগুলি। পরে কলকাতা পুরসভার তরফে সেগুলি তুলে নিয়ে যাওয়া হবে। পরে সেগুলি পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে তোলার জন্য পাঠানো হবে অন্য রাজ্যে। কলকাতা পুরসভার জনৈক আধিকারিক জানিয়েছেন, “গত কয়েক বছরের মধ্যে বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম ব্যবহারের পরিমাণ ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। যার ফলে এই ধরনের বাতিল হওয়া বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম যেখানে সেখানে ফেলা হচ্ছে। সেই কথা মাথায় রেখে এর জন্য পৃথক ব্যবস্থা করার প্রয়োজন ছিল। কারণ আমাদের কাছে এই ধরনের অভিযোগ আসছিল। তাই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে।” উল্লেখ্য, গত বছরের ১লা ডিসেম্বর থেকে মহানগর জুড়ে চালু হয়েছে উৎস থেকে বর্জ্য পৃথকীকরণ প্রকল্প। যার মাধ্যমে আর একসঙ্গে নয়, আলাদা করে ফেলতে হচ্ছে পচনশীল ও অপচনশীল আবর্জনা। বর্জ্য পৃথকীকরণ প্রকল্পে রান্নাঘরের বর্জ্য বা পচনশীল বর্জ্য সবুজ বালতিতে ফেলতে হচ্ছে। পাশাপাশি নীল বালতিতে শুকনো বর্জ্য, যেমন প্লাস্টিক, কাগজ, কাচ এবং ধাতু অর্থাৎ অপচনশীল বর্জ্য ফেলছেন শহরবাসীরা।