ত্রাতা হয়ে দাঁড়াল মালদহ মেডিক্যাল কলেজ। আচমকাই কুরকুরে খেতে গিয়ে খেলনা বাঁশি গলায় আটকে গিয়েছিল এক শিশুর। প্রচণ্ড কাশি হচ্ছিল, দমবন্ধ হয়ে আসছিল তার। বাচ্চাটিকে দ্রুত মালদা মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যায় তার বাবা-মা। সেখানে ঘণ্টা দেড়েকের অস্ত্রোপচারে প্লাস্টিকের বাঁশিটা বের করে শিশুটির প্রাণ বাঁচান ডাক্তারবাবুরা। মালদা মেডিক্যাল কলেজ এর আগেও অনেক জটিল অস্ত্রোপচার করে সাফল্য পেয়েছে। আরও একবার সাফল্য পেলেন অভিজ্ঞ ডাক্তারবাবুরা। জানা গেছে, কালিয়াচকের পশ্চিম খাস চাঁদপুরের বাসিন্দা কিসমত শেখের বছর ছয়েকের ছেলে আবদুল হামিদ শেখের গলায় খেলনা বাঁশি আটকে গিয়েছিল। বৃহস্পতিবার সন্ধেয় বাচ্চাটি বাড়িতে কুরকুরে খাচ্ছিল। কুরকুরের প্যাকেটে যে খেলনা বাঁশি থাকে তা বাচ্চাটির গলায় আটকে যায়। গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে শিশুটি। তড়িঘড়ি তাকে স্থানীয় প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে মালদা মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয় বাচ্চাটিকে। সেখানে ইএনটি বিভাগের ডাক্তারবাবুরা পরীক্ষা করে বাচ্চাটির ব্রঙ্কোস্কোপি করেন। আর ব্রঙ্কোস্কোপিতেই বাঁশিটি বেরিয়ে আসে।
প্রসঙ্গত, ব্রঙ্কোস্কোপি হল এমন একটা পদ্ধতি যেখানে একটি সরু ও ধাতব নল সোজা নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসের পথে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। এই নলকে বলে ব্রঙ্কোস্কোপ। এই ব্রঙ্কোস্কোপ ঢুকিয়ে ডাক্তাররা গলা, ল্যারিংক্স বা স্বরনালি, ট্রাকিয়া বা শ্বাসনালির পরীক্ষা করে থাকেন। শ্বাসনালিতে কোনও ‘ফরেন পার্টিকল’আটকে গেলে বা সংক্রমণ হলে, এই পদ্ধতিতে চিকিৎসা করেন ডাক্তাররা। অনেক সময় বুকের এক্স-রে বা চেস্ট এক্স-রে তে সবটা ধরা পড়ে না। তখন ব্রঙ্কোস্কোপির সাহায্য নেওয়া হয়। এই পদ্ধতিতে শ্বাসনালী বা ফুসফুসে ব্লকেজ থাকলে সেটাও ছাড়ানো যায়। আবার বায়োপসির জন্য কোষ বা মিউকাসের নমুনাও সংগ্রহ করা যায়। মালদা মেডিকেল কলেজের ডাক্তার গণেশ চন্দ্র গাইন, ডাক্তার শুভজিৎ সরকার, ডাক্তার এম এ রহমান সহ প্রায় আট জনের একটি টিম তৈরি হয়েছিল। দেড় ঘণ্টা ধরে অস্ত্রোপচার হয়। বর্তমানে শিশুটি সুস্থ রয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। আশ্বস্ত বাবা মা-ও।